Aajbikel

চিরদিন কাহারও সমান নাহি যায়! একথা হারে হারে টের পাচ্ছেন অনুব্রত!

 | 
চিরদিন কাহারও সমান নাহি যায়! একথা হারে হারে টের পাচ্ছেন অনুব্রত!

নিজস্ব প্রতিনিধি: একটাই শব্দ বলতে হয়, অবশেষে! হাজার চেষ্টা করেও দিল্লি যাত্রা আটকাতে পারলেন না বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। দোলযাত্রার দিন দিল্লি যাত্রা করেছেন কেষ্ট। এমনটা যে হতে পারে কয়েক মাস আগেও সেটা ভাবতে পারেননি তৃণমূলের এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা। চিরদিন কাহারও সমান নাহি যায়! নিজের জীবনের এই পরিণতি দেখে নিশ্চয়ই এমনই উপলব্ধি হচ্ছে অনুব্রতর।

বীরভূমে তিনি কতটা প্রভাবশালী ছিলেন সেটা গোটা রাজ্যের মানুষ জানেন। এমনকী দিল্লি যাওয়ার সময় সকালে  শক্তিগড়ে ব্রেকফাস্ট টেবিলেও অনুব্রত বৈঠক করে নিলেন জেলা তৃণমূলের তিন নেতার সঙ্গে। সবাইকে অবাক করে তাঁর পাহারায় থাকা পুলিশকর্মীরা বসলেন অন্য টেবিলে। অর্থাৎ আলাদা করে কথা বলার জন্য সুযোগ করে দিলেন পুলিশকর্মীরা, এমনটাই অভিযোগ উঠেছে। জেল হেফাজতে থাকা এক বন্দি কীভাবে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন, তাও আবার পুলিশকর্মীদের সামনে, সেটা সবাইকে অবাক করেছে। আর সেই বিষয়টি নিয়ে বিরোধীদের দাবি এতদিন জেলে রাজার হালেই ছিলেন অনুব্রত।

২০১১ সালে রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বীরভূমে প্রশাসন যেন আলাদা করে চালাতে শুরু করেন অনুব্রত। কার বাড়িতে পুলিশ  যাবে, কাকে গ্রেফতার করতে হবে, কাউকে গ্রেফতার করা হলে তাঁর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানা কি কি ধারা প্রয়োগ করবে, এই সমস্ত যাবতীয় বিষয় এতদিন ধরে অনুব্রত নিয়ন্ত্রণ করে এসেছেন বলেই অভিযোগ। অর্থাৎ অনুব্রতর নির্দেশ ছাড়া বীরভূমে যেন গাছের পাতা মাটিতে পড়ত না। বিগত এক দশকের বেশি সময় ধরে বীরভূমে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের উপর শাসকদল চরম অত্যাচার করেছে বলে অনুব্রত ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ উঠেছে। পঞ্চায়েত বা পুরসভা নির্বাচনে অধিকাংশ আসনে বিরোধীরা প্রার্থী দিতে পারেনি। বিনা ভোটে জিতে গিয়েছেন তৃণমূলের প্রার্থীরা। আর তখন রাজ্যবাসী শুনেছেন অনুব্রতর তারিয়ে তারিয়ে বলা বিভিন্ন ডায়ালগ।

ভোটের সময় নকুলদানা দিলি, চড়াম চড়াম ঢাক বাজবে, রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন, তালিকা শেষ হওয়ার নয়। এভাবেই বিরোধীদের নিশানা করে হুঁশিয়ারি দিতেন তিনি। বাংলার রাজনীতিতে অনুব্রতর সেই সমস্ত ডায়লগ অন্যতম চর্চিত বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়ায়। সেই অনুব্রত গরুপাচার মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর দীর্ঘদিন ধরে আসানসোল জেলে বন্দি ছিলেন। এখন আদালতের নির্দেশে ইডি আধিকারিকরা তাঁকে দিল্লি নিয়ে গেলেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে অনুব্রত মণ্ডল জেলবন্দি থাকবেন, এটা কেউ কখনও ভাবতে পেরেছিলেন কি? রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অনুব্রতকে 'বীরভূমের বাঘ' বিশেষণে ভূষিত করেছেন। আর বর্তমান পরিস্থিতিতে বিরোধীদের কটাক্ষ, বীরভূমের বাঘের অবস্থা বিড়ালের চেয়েও খারাপ হয়ে গিয়েছে। 

এখন প্রশ্ন দিল্লিতে জেরার সময় অনুব্রত এমন কোনও নাম কী সামনে আনবেন যাতে আলোড়ন পড়ে যেতে পারে রাজ্য রাজনীতিতে? এবার কী উঠে আসতে পারে বেশ কিছু প্রভাবশালীর নাম? এমন জল্পনা যথারীতি শুরু হয়েছে রাজ্য জুড়ে। তাই দিল্লি যাত্রার পর নতুন করে অনুব্রত মণ্ডল খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন।  আগামী দিনগুলিতে অনুব্রত এপিসোডে নতুন কিছু দেখা যায় কিনা এখন তারই অপেক্ষা।

Around The Web

Trending News

You May like