Aajbikel

ফের দিলীপ-শুভেন্দু দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে, নন্দীগ্রামের বিধায়কের উপরেই আস্থা বেশি কেন্দ্রের?

 | 
শুভেন্দু

নিজস্ব প্রতিনিধি:  বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে নিয়মিত সাংবাদিক সম্মেলন করতে দেখা যাচ্ছে শাসক দল তৃণমূলকে। উল্টোদিকে শুভেন্দুও ধারাবাহিকভাবে তৃণমূলকে নিশানা করে চলেছেন। তাই লড়াইটা কার্যত শুভেন্দু বনাম তৃণমূল হয়ে যাচ্ছে। আর শুভেন্দু যেভাবে চালিয়ে খেলছেন তাতেই  তিনি রাজ্য বিজেপির অন্যান্য নেতাকে পিছনে ফেলে দিয়েছেন বলে রাজনৈতিক মহল মনে করে। এই পরিস্থিতিতে কথা দিয়ে কথা রাখলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ ও পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নায় নিহত দুই বিজেপি কর্মীর পরিবারের দুই সদস্যকে সোমবার চাকরি দিলেন শুভেন্দু। মৃতের পরিবারের দুই সদস্যকে বিধানসভায় নিজের ঘরে ডেকেছিলেন তিনি। সেখানেই ময়নায় নিহত বিজেপি বুথ সভাপতি বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইয়ার ছেলে প্রসেনজিৎ ভুঁইয়া এবং কালিয়াগঞ্জে নিহত মৃত্যুঞ্জয় বর্মণের স্ত্রী গৌরী বর্মণকে চাকরি দেন শুভেন্দু। আগামী এক বছর তাঁরা বিধানসভায় শুভেন্দু অধিকারীর অফিসে অ্যাটেন্ডেন্ট হিসেবে কাজ করবেন। উল্লেখ্য রাজ্য বিধানসভার নিয়ম অনুযায়ী এই চাকরি দেওয়ার অধিকার রয়েছে বিরোধী দলনেতার। সেই সূত্রেই চাকরি দিয়েছেন তিনি। তবে এক বছর পর তাঁদের নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
গত এপ্রিল মাসে কালিয়াগঞ্জে পুলিশের গুলিতে মৃত্যুঞ্জয় বর্মণ নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। নিহতের পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরেই বিজেপির সঙ্গে যুক্ত।

অন্যদিকে পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নায় দুষ্কৃতীদের আক্রমণে বিজেপির বুথ সভাপতি বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইয়ার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় যুক্ত তৃণমূল, এমনটাই অভিযোগ বিজেপির। আর দুটি ঘটনাতেই শুভেন্দু সিবিআই তদন্তের দাবি জানান। সেই সঙ্গে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নিহতদের পরিবারের সদস্যকে তিনি নিজেই চাকরি দেবেন। সোমবার সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করলেন শুভেন্দু। এ প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা বলেন, "এটা করা উচিত ছিল রাজ্য সরকারের। কিন্তু রাজ্য সরকার সেই দায়িত্ব পালন করল না। তাই আমাদেরকে এই দায়িত্ব পালন করতে হল। যদি চাকরি নাও দিতে পারতাম তাহলে আমি ওঁদের পার্টি অফিসেই কোনও একটা কাজে নিযুক্ত করতাম"। আর এই ভূমিকার জন্য দলের  পাশাপাশি রাজ্যবাসীর কাছেও বাড়তি সম্ভ্রম আদায় করে নিতে পেরেছেন শুভেন্দু, এমনটাই মত রাজনীতির কারবারিদের একাংশের। এই সমস্ত কারণেই কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব শুভেন্দুকে যে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন সেটা দিনদিন স্পষ্ট হচ্ছে।

তবে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে শুভেন্দুর দ্বন্দ্ব যেভাবে বারবার প্রকাশ্যে আসছে তাতে নিঃসন্দেহে অস্বস্তি বাড়ছে গেরুয়া শিবিরের। এগরায় বাজি বিস্ফোরণের ঘটনায় এত জন মানুষের মৃত্যুর পর যে প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করেছেন শুভেন্দু, তাতে দ্বন্দ্বের কারণে থাকছেন না দিলীপ। অথচ দিলীপ সেই কর্মসূচিতে থাকবেন বলে পোস্টার পড়তে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু দ্রুত সেই পোস্টারগুলি তুলে নেওয়া হয়। ঘটনা হল এগরা বিধানসভা কেন্দ্রটি দিলীপ ঘোষের লোকসভা কেন্দ্র মেদিনীপুরের অন্তর্গত। আবার উল্টোদিকে পূর্ব মেদিনীপুর শুভেন্দুর জেলা হিসেবেই পরিচিত, যার মধ্যে পড়ছে এগরা। তাই এগরার কর্মসূচিতে কার প্রাধান্য বেশি থাকবে সেটা নিয়েই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে দিনের শেষে নন্দীগ্রামের বিধায়কের সিদ্ধান্তই মূলত মান্যতা পাচ্ছে। তাই রাজ্য বিজেপি যে শুভেন্দুময় হয়ে  উঠেছে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

Around The Web

Trending News

You May like