কলকাতা: লোকসভা নির্বাচনের বিজেপির বিজয়-রথ রুখে বাংলার তিন বিধানসভা কেন্দ্রে জয় ছিনিয়ে এনেছে তৃণমূল৷ তিন-শূন্য ফলাফলে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত তৃণমূল৷ লোকসভা ভোটের মতো এবারের উপ-নির্বাচনে তৃতীয় স্থানে দৌড় শেষ করেছে বাম-কংগ্রেস জোট৷ দ্বিতীয় স্থানে থেকেও নিজেদের ধরে রাখা আসন তৃণমূলের কাছে কার্যত আত্নসমর্পন করছে বিজেপি৷ কিন্তু, লোকসভা নির্বাচনের ছ’মাসের মধ্যে হঠাৎ কীভাবে বাংলা থেকে উধাও গেরুয়া ঝড়? তৃণমূলের এই হ্যাটট্রিকের পিছনে কি সেই ভোটগুরুর কৌশল?
নির্বাচন কমিশনে দেওয়া তথ্য বলছে, কালিয়াগঞ্জ, খড়্গপুর ও করিমপুরে জয়ী তৃণমূল৷ কালিয়াগঞ্জ বিধানসভায় ২৩০৪ ভোটের ব্যবধানে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী তপন দেব সিনহা৷রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের দুর্গ খড়্গপুর সদরেও জয়ী তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপ সরকার৷ তাঁর জয়ের ব্যবধান ২০ হাজার ৮১১ ভোট৷ করিমপুরে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী বিমলেন্দু সিংহ রায়৷ তাঁর জয়ের ব্যবধান ২৪ হাজার ১১৯ ভোট৷
লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার ছ’মাসের মধ্যে কীভাবে জয়ের ব্যবধান বাড়াল তৃণমূল? এর পিছনে ভোটগুরুর কৌশল? কেননা, তৃণমূলের দায়িত্ব নেওয়ার পর এই তিন কেন্দ্রের উপনির্বাচন ছিন প্রশান্ত কিশোর ও তাঁর সংস্থার প্রথম অগ্নিপরীক্ষা৷ সেই পরীক্ষায় নেমে বেশ কিছু চমকও দিয়েছিলেন ভোটগুরু৷ তিন কেন্দ্রে স্থানীয় সমস্যাকে গুরুত্ব দিয়ে প্রথম পৃথক পৃথক ইস্তেহার প্রকাশ করে তিনি৷ এছাড়াও স্থানীয় সমস্যা নিয়ে এলাকায় এলাকায় রিফলেট বিলি, দলীয় কর্মীদের মুহূর্তে মুহূর্তে নির্দেশ, বেশ মাত্রায় মানুষের মুখোমুখি হওয়া, সমস্যা-অভাব-অভিযোগ শোনার উপর গুরুত্ব বাড়ানো ছিল ভোটগুরুর প্রধান কৌশল৷
সঙ্গে ছিল আপোষহীন এনআরসি বিরোধীতা৷ আর সেই আপোষহীন লড়াই কি তৃণমূলকে জয়ের হ্যাটট্রিক গড়ে দিতে সাহায্য করল? বাংলার নির্বাচনে প্রথম বুদ্ধি খাটিয়ে নিজের জাত চেনালেন ভোটগুরু প্রশান্ত? ২০২১-এর নির্বাচনেও কী সেই ধারা অটুট রাখতে রাখতে পারবেন প্রশান্ত কিশোর? দিন গুনছেন উচ্ছ্বসিত তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা৷
তৃণমূলের জয়ের হ্যাটট্রিক প্রসঙ্গে ইতিমধ্যেই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ জানিয়েছেন, ‘‘অহঙ্কারের ফল পেয়েছে বিজেপি৷ বাংলায় ঔদ্ধত্য চলে না৷’’