Aajbikel

ভোট ঘোষণা হতেই রক্তাক্ত ত্রিপুরা, খুন তিপ্রা মোথার কর্মী! আক্রান্ত কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক-সহ একাধিক নেতা!

 | 
ভোট ঘোষণা হতেই রক্তাক্ত ত্রিপুরা, খুন তিপ্রা মোথার কর্মী! আক্রান্ত কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক-সহ একাধিক নেতা!

আগরতলা: ত্রিপুরায় নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষিত হয়েছে। উত্তর-পূর্ব ভারতের এই ছোট্ট পাহাড়ি রাজ্যটিতে বিজেপি ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবে কিনা সেটা নিয়ে জনমানসে এখন আগ্রহ তুঙ্গে। ১৬ ফেব্রুয়ারি ভোট হবে সেখানে। আর নির্বাচনী দিনক্ষণ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই রক্ত ঝরল ত্রিপুরায়। বুধবার ত্রিপুরার সুরমা কেন্দ্রের অন্তর্গত ধলাই জেলায় খুন হয়েছেন প্রণজিৎ নমঃশূদ্র নামে তিপ্রা মোথার এক কর্মী। তাঁকে গাড়ি থেকে নামিয়ে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে শাসক দল বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। যদিও বিজেপি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। শুধু এই ঘটনাই নয়, একই দিনে কংগ্রেসের মিছিলে হামলা করেছে দুষ্কৃতীরা। ঘটনায় ত্রিপুরা কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক অজয় কুমার, ত্রিপুরার প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি গোপাল রায়, রাজ্য নেতা রতন দাস, বিজয় দাস-সহ অনেকেই আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। যে ঘটনায় গোটা ত্রিপুরা জুড়ে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এই সমস্ত ঘটনায় বিজেপির বিরুদ্ধে মহাজোটের সম্ভাবনা আরও বেড়ে গিয়েছে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে।

গত বিধানসভা নির্বাচনে ত্রিপুরায় বামেদের পুরোপুরি পর্যুদস্ত করে বিজেপি যে ক্ষমতায় আসবে সেটা অনেকেই ভাবতে পারেননি। আসলে গত নির্বাচনে ত্রিপুরায় কংগ্রেসের পুরো ভোটটাই কার্যত চলে গিয়েছিল বিজেপির দিকে। আর সেই কারণেই সিপিএমের কাজটা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এই পরিস্থিতিতে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে  কংগ্রেস ও সিপিএমের জোট হতে চলেছে। বড় কোনও অঘটন না ঘটলে এই দুটি দলের জোট নিশ্চিত বলেই মনে করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার আসন রফা নিয়ে  চূড়ান্ত পর্যায়ের বৈঠক শুরু হতে চলেছে।

এর পাশাপাশি সেই জোটে যদি ত্রিপুরার জনজাতি অধ্যুষিত দল তিপ্রা মোথা যোগ দেয় তাহলে বিজেপির ক্ষমতা ধরে রাখা খুব কঠিন হবে বলেই রাজনীতির কারবারিরা মনে করছেন। এই প্রস্তাবিত মহাজোটে তিপ্রা মোথার যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। সদ্য সাংবাদিক সম্মেলন করে দলের প্রধান প্রদ্যোৎ কিশোর দেববর্মন জানিয়েছেন ত্রিপুরায় ভোট ভাগাভাগি করতে চান না তাঁরা। যে সমস্ত আসনে জয় সম্ভব নয় সেখানে তাঁরা প্রার্থী দেবেন না। ৬০ আসন বিশিষ্ট ত্রিপুরা বিধানসভায় বড়জোর ৪০ থেকে ৪৫ আসনে প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের, এমনটাই জানিয়েছেন প্রদ্যোৎ। শুধু তাই নয়, ত্রিপুরা রাজনীতিতে অনেকটাই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাওয়া আইপিএফটি দলকেও তাঁদের সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে আন্দোলনে আসার ডাক দিয়েছেন প্রদ্যোৎ। তাই আসন্ন ত্রিপুরা নির্বাচনে বিজেপিকে মহাজোটের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হতেই পারে। সে ক্ষেত্রে তাদের লড়াই যে অত্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়াবে তা স্পষ্ট। তবে এই মহাজোটে তৃণমূল সামিল হবে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।

ত্রিপুরা তৃণমূলের বক্তব্য অনুযায়ী তাঁরা গোটা বিষয়টির উপর নজর রাখছেন। যদিও ত্রিপুরায় তৃণমূলের যে সামান্য শক্তিবৃদ্ধি হয়েছিল তা এখন নেই বললেই চলে। বিজেপি বাদে ত্রিপুরার প্রধান বিরোধী শক্তি নিঃসন্দেহে বাম এবং কংগ্রেস। এছাড়া জনজাতি অধ্যুষিত ১৪ টি বিধানসভা কেন্দ্রে অন্যতম প্রধান শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে  তিপ্রা মোথা। তাই এই তিনটি দলের মহাজোট হয় কিনা এখন সেদিকেই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের।

Around The Web

Trending News

You May like