মেঘালয় নির্বাচনে কতটা ছাপ ফেলতে পারবে তৃণমূল? ভোটের মুখে তৃণমূল ছেড়লেন একাধিক নেতা-বিধায়ক!

মেঘালয় নির্বাচনে কতটা ছাপ ফেলতে পারবে তৃণমূল? ভোটের মুখে তৃণমূল ছেড়লেন একাধিক নেতা-বিধায়ক!

নিজস্ব প্রতিনিধি:  তৃণমূলের নজরে ত্রিপুরা এবং মেঘালয়। ফেব্রুয়ারি মাসে হতে চলা উত্তর-পূর্ব ভারতের দুই ছোট রাজ্যের নির্বাচনে তৃণমূল কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে। সেখানে মেঘালয় নিয়ে তৃণমূলের প্রত্যাশা একটু বেশি। কারণ ২০২১ সালের শেষ দিকে কংগ্রেসের ১২ জন বিধায়ক তৃণমূলে যোগদান করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমার নেতৃত্বে। রাতারাতি মেঘালয়ে প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা পেয়ে যায় তৃণমূল। তাই তৃণমূলের আশা এবার তারা মেঘালয়ে ক্ষমতায় আসবে ক্ষমতাশীন এনপিপি’কে হারিয়ে।

মেঘালয়ে ৬০টি বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে। প্রত্যেকটিতেই প্রার্থী দেবে তৃণমূল। ইতিমধ্যেই ৫২টি কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করেছে তারা। তৃণমূল ক্ষমতায় আসলে পশ্চিমবঙ্গের মতো বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্প মেঘালয়ে চালু করা হবে, এমনটাই প্রতিশ্রুতি সে রাজ্যে গিয়ে দিয়ে এসেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সর্বভারতীর সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে তৃণমূলের দাবি তারা ক্ষমতায় এলে দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন উপহার পাবে মেঘালয়বাসী। কিন্তু প্রশ্নটা সেখানেই। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তাই এসব দেখে মেঘালয়ের মানুষ কি তৃণমূলের উপর ভরসা রাখতে পারবেন? উল্লেখ্য মেঘালয়ে এতদিন বিজেপি এবং এনপিপি একজোট হয়ে সরকার চালিয়েছে। কিন্তু এবারের নির্বাচনে বিজেপি একা লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ একটাই, গত পাঁচ বছরে মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী তথা এনপিপি প্রধান কনরাড সাংমার সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সেই দুর্নীতির দায় নিতে চায় না বিজেপি। তাই তারা একলা চলোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই জায়গা থেকে তৃণমূল কতটা সুবিধা করতে  পারবে সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। আর সেই কারণেই নির্বাচনের আগেই কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া চার বিধায়কের পাশাপাশি একাধিক নেতা-কর্মী দল ছেড়ে দিয়েছেন। এমনকী তৃণমূলের ঘোষিত প্রার্থীদের মধ্যে একজন দল ছেড়ে নির্দল দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে কি তৃণমূলের টিকিটে জয় সুনিশ্চিত নয় বলেই তিনি দল ছেড়ে দিয়েছেন? এই চর্চা শুরু হয়েছে পাহাড়ি রাজ্যটিতে।

গোয়া বিধানসভা নির্বাচনের আগে সেই রাজ্যের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আলেমেও চার্চিল ও লুইজিনহো ফেলেইরো যথেষ্ট ঢাকঢোল পিটিয়ে তৃণমূলে যোগদান করেছিলেন। বলেছিলেন গোয়াতে বিজেপিকে একমাত্র তৃণমূলই হারাতে পারে, তাই তাঁরা সে দলে যোগদান করেছেন। কিন্তু এমন অবস্থা হল গোয়া বিধানসভা নির্বাচনের আগে যে ভোটে তৃণমূলকে নেতৃত্ব দেওয়া তো দূরের কথা, নির্বাচনে প্রার্থী হতেই রাজি হলেন না ফেলেইরো। যথারীতি গোয়া বিধানসভা নির্বাচনে মুখ পোড়ে তৃণমূলের। ছয় শতাংশের কম ভোট পাওয়ার পাশাপাশি প্রায় প্রত্যেকটি আসনে জামানত বাজেয়াপ্ত হয় তাদের। এরপর থেকেই গোয়া যাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে তৃণমূল নেতাদের। তাই মুকুল সাংমার হাত ধরে যেভাবে তৃণমূল মেঘালয়ে জয়ের স্বপ্ন দেখছে তাতে তাদের পরিণতি গোয়ার মতোই হবে না তো? এই চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। গোয়াতে তৃণমূল ক্ষমতায় এলে প্রত্যেক মহিলাকে মাসে ৫০০০ টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। এবার মেঘালয়েও মহিলাদের প্রতি মাসে এক হাজার টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি তৃণমূল দিয়েছে। উদ্দেশ্য একটাই মহিলাদের ভোট টানা। এছাড়া রয়েছে আরও বহু প্রতিশ্রুতি। কিন্তু সেগুলিতে মানুষ কতটা ভরসা রাখবেন তা বোঝা যাবে ভোটবাক্সের ফলেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × two =