ত্রিপুরায় জোটে নয়, একাই লড়ছে তিপ্রা মোথা! কিছুটা অক্সিজেন পেল বিজেপি?

ত্রিপুরায় জোটে নয়, একাই লড়ছে তিপ্রা মোথা! কিছুটা অক্সিজেন পেল বিজেপি?

নিজস্ব প্রতিনিধি: ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে বিগত কয়েক মাস ধরেই বেশ চিন্তায় ছিল বিজেপি। কারণ যবে থেকে বিপ্লব দেব মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন তখন থেকেই ত্রিপুরা মানুষের একাংশ সরকারের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন নানা কারণে। তাই দেরিতে হলেও মুখ্যমন্ত্রী পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছেন কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব। এই নির্বাচনে বিজেপি লড়ছে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার নেতৃত্বে। প্রতিটি রাজ্যে নির্বাচনের আগে কতটা ভাল ফলাফল তারা করতে পারে তা নিয়ে অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা চালিয়ে থাকে বিজেপি। সেক্ষেত্রে ত্রিপুরার রিপোর্ট তাদের একেবারেই আস্বস্ত করেনি। ৬০ আসন বিশিষ্ট ত্রিপুরায় ম্যাজিক সংখ্যা ৩১। সেখানে গত মাসের শেষের দিকে বিজেপির অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট বলছে ত্রিপুরায় তারা ২২টির বেশি আসনে পাবে না। সেই সময় জনজাতি অধ্যুষিত আঞ্চলিক দল আইপিএফটি বিজেপির সঙ্গে এবার জোট করবে না বলেই জানা যায়।

গতবছর এই দলের সঙ্গে জোট করেই ত্রিপুরায় ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। তারা গত নির্বাচনে আটটি আসনে জয় পায়। একই সঙ্গে জনজাতি অধ্যুষিত ভোটারদের অন্য দিশা দেখাতে শুরু করে তিপ্রা মোথা। স্বাভাবিকভাবেই এতে বিজেপির চিন্তা আরও বেড়ে যায়। শোনা যায় বিজেপিকে ছেড়ে তিপ্রা মোথার সঙ্গে জোট করবে আইপিএফটি। তাতে গেরুয়া শিবিরের চিন্তা আরও বেড়ে যায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই জোট না হওয়ায় ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে একলা চলোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তিপ্রা মোথা। ইতিমধ্যেই তারা ৩২টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিয়েছে। সব মিলিয়ে ত্রিপুরায় এবার জমজমাট লড়াই হতে চলেছে বলেই রাজনৈতিক মহল মনে করছে।

ত্রিপুরায় জনজাতি অধ্যুষিত ১৪ টি বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে। তিপ্রা মোথার দাবি এই ১৪টি কেন্দ্রেই তারা জেতার মতো জায়গায় রয়েছে। তাই তারা চেয়েছিল আইপিএফটির সঙ্গে জোট করতে। কারণ এই দলটিও জনজাতিদের স্বার্থ নিয়েই রাজনীতি করে। এই দুটি দলের জোট হয়ে গেলে ১৪ টি আসনে বিজেপির লড়াই যে আরও কঠিন হতো সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই শেষ মুহূর্তে আইপিএফটির সঙ্গে বিজেপির জোট পুনরায় হয়ে যাওয়ায় অনেকটাই স্বস্তি পেয়েছে গেরুয়া শিবির। তবু তিপ্রা মোথা আলাদা লড়াই করে কাদের ভোট কাটবে সেটা নিয়ে অঙ্ক কষতে শুরু করে দিয়েছেন রাজনীতির কারবারিরা।

এর আগে স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনে তিপ্রা মোথা একা লড়াই করে সবাইকে পরাজিত করে বোর্ড গঠন করে। তাই এটা নিশ্চিত প্রদ্যোৎ কিশোর মানিক্য দেববর্মনের দল তিপ্রা মোথা নিশ্চিতভাবে শাসক দল বিজেপির ভোট কাটতে চলেছে। সেক্ষেত্রে ভোট কাটাকুটির ফলে কংগ্রেস-সিপিএম জোট লাভবান হতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন ত্রিপুরার বহু আসনে এবার অত্যন্ত কম ভোটের ব্যবধানে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়ে যাবে। তাই প্রত্যেকটি ভোটই রাজনৈতিক দলগুলির কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর সেটা মাথায় রেখেই এখন রাজনৈতিক দলগুলির তৎপরতা তুঙ্গে। শেষ পর্যন্ত ভোটবাক্স কার হয়ে কথা বলে সেটা সময়ই বলবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

six − five =