তৃণমূলের জনসম্পর্ক অভিযানের কাছে পিছিয়ে পড়ছে বিরোধীরা? পঞ্চায়েত ভোটের আগে কতটা এগিয়ে তৃণমূল?

তৃণমূলের জনসম্পর্ক অভিযানের কাছে পিছিয়ে পড়ছে বিরোধীরা? পঞ্চায়েত ভোটের আগে কতটা এগিয়ে তৃণমূল?

নিজস্ব প্রতিনিধি: পঞ্চায়েত নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে। কয়েক মাসের মধ্যেই গ্রাম বাংলার এই নির্বাচন হবে। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল সেই লক্ষ্যেই নিজেদের মতো করে প্রচার শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু এটা স্পষ্ট যে জনসংযোগের ক্ষেত্রে তৃণমূল অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছে বিরোধীদের। তৃণমূলের নতুন কর্মসূচি ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ শুরু হয়ে গিয়েছে। মানুষের কাছে তৃণমূলের প্রতিনিধি হিসেবে যাচ্ছেন ‘দিদির দূত’রা। মানুষের অভাব অভিযোগের কথা শুনছেন তাঁরা। আশ্বাস দিচ্ছেন সমস্ত মেটানোর। ‘দুয়ারে সরকার’-এর মতো তৃণমূলের এই কর্মসূচিও মানুষের কাছে অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করে। সেই জায়গা থেকে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি পিছিয়ে রয়েছে। বাম-কংগ্রেসও জনসংযোগের নিরিখে পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূলের থেকে।

এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা বোঝাতে গ্রামাঞ্চলে শিবির করবেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। ঠিক অনেকটাই তৃণমূলের দুয়ারে সরকারের ধাঁচে এই শিবিরগুলি করা হবে বলে বিজেপি সূত্রে খবর। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির প্রধান পর্যবেক্ষক সুনীল বনশালের পরামর্শেই এই শিবিরগুলি হতে চলেছে। তাঁর  পরামর্শ,” কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা যাতে গ্রামের মানুষ পান সেটা সুনিশ্চিত করতে এলাকায় এলাকায় শিবির করুন”। বিজেপি সূত্রে খবর, তৃণমূলের ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পের মতোই এই শিবিরগুলি হবে। সেখানে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ফর্ম ফিলআপ করতে পারবেন উপভোক্তারা। এভাবেই  বিজেপি ‘গ্রামে চলো’র ডাক দিয়েছে।

সদ্য কেন্দ্রীয় সরকার বিশেষ সম্মান দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পটিকে। এটি প্ল্যাটিনাম ডিজিটাল পুরস্কার পেয়েছে। এই প্রকল্পের বেশ অভিনবত্ব রয়েছে বলে কেন্দ্র মনে করে। কারণ গ্রামের লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষ ‘দুয়ারে সরকার’ ক্যাম্পের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্পের ফর্ম ফিলআপের পাশাপাশি বহু বিষয়ে জানতে পারেন। এভাবে  তাঁরা নানা সুবিধা পাচ্ছেন রাজ্য সরকারের কাছে। এবার সেই পথে হাঁটতে চায় বিজেপিও।
তবে প্রতিটি নির্বাচনে প্রচারের ক্ষেত্রে শাসক দল যে অনেকটাই বাড়তি সুবিধা পায় সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সেই জায়গা থেকে পঞ্চায়েত নির্বাচনেও তৃণমূল অনেকটাই সুবিধাজনক জায়গায় রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা রাজ্য সরকারের বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পের পাশাপাশি ‘দুয়ারে সরকার’, ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ তৃণমূলকে যে অনেকটাই সুবিধাজনক জায়গায় এনে দিয়েছে, সেটা ঠারেঠোরে মেনে নিচ্ছেন বিরোধীরা।

এমনিতেই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাউন্টার করার মতো গ্রহণযোগ্য মুখ বিরোধীদের নেই। তার উপর জনসংযোগেও পিছিয়ে পড়েছে বিরোধীরা। সেই জায়গা থেকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল বিরোধীদের থেকে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে বলে রাজনীতির কারবারিরা মনে করছেন। যদিও বিরোধীদের দাবি পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলকে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে ফেলে দিয়েছে তারা। দুর্নীতি ইস্যুতেই তৃণমূল পঞ্চায়েতে ধাক্কা খাবে বলে বিরোধীদের বিশ্বাস। আর সেভাবেই প্রচারের যাবতীয় রণকৌশল তৈরি করছে তারা। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের জনসংযোগ কর্মসূচির পাল্টা হিসেবে বিরোধীরা কি খাড়া করে সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *