নিজস্ব প্রতিনিধি: তবে কি যত কাণ্ড ডিসেম্বরে? বিগত কয়েক মাস ধরে রাজ্য রাজনীতিতে অন্যতম চর্চিত বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে ডিসেম্বর মাস। ডিসেম্বরে হয় তৃণমূল সরকার পড়ে যাবে, নয়ত এমন কিছু ঘটবে যাতে চরম অস্বস্তির মধ্যে পড়বে রাজ্য প্রশাসন, বিজেপি নেতাদের কথাবার্তায় এমন একটা আবহ তৈরি হয়েছে। আর এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে তৃণমূল কিছুটা হলেও তা নিয়ে ভীত হয়ে পড়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার নদিয়ায় প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাৎপর্যপূর্ণভাবে বলতে শোনা গিয়েছে, ডিসেম্বরে বাংলায় অশান্তি হতে পারে। সেই সূত্রে রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনকে সতর্ক করেছেন তিনি। বিশেষ করে সীমান্ত এলাকায় নজর রাখার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনিক বৈঠক চলার সময় রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্যের সঙ্গে কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী। নদিয়া জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা জানতে চান তাঁর কাছে। সেইসঙ্গে নাম না করে বিজেপিকে নিশানা করে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ডিসেম্বর থেকে ধামাকা হবে! সেই সঙ্গে পুলিশের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়,ভিআইপি গাড়িতে করে যাতে রাজ্যে অস্ত্র না ঢোকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সেই লক্ষ্যে বাড়াতে হবে নাকা চেকিং। মুখ্যমন্ত্রী এদিন নাম না করে বিষয়টি নিয়ে বিজেপির দিকেই যে ইঙ্গিত করেছেন তা স্পষ্ট। আর সেই সূত্রেই পুলিশ প্রশাসনকে সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছেন তিনি।
এখন প্রশ্ন, সত্যিই কি বছরের শেষ মাসে কিছু ঘটতে পারে? যেভাবে বিজেপি নেতারা একথা বলে চলেছেন তাতে কিছু একটা ঘটবে এমনটা অনেকেই মনে করছেন। আর এত সব ঢক্কানিনাদের পর তৃণমূল যদি সামান্যতম অসুবিধার মধ্যে না পড়ে, তাহলে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব রাতারাতি বাংলার মানুষের কাছে হাস্যস্পদ হয়ে উঠবেন। তখন সবাই বলতে থাকবেন বাজার গরম করার জন্য এমন কথা তাঁরা বলেই থাকেন। সেক্ষেত্রে আগামী দিনে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের কথাকে একেবারেই সিরিয়াসলি গ্রহণ করবেন না বাংলার মানুষ। অর্থাৎ বাংলায় আরও জমি হারাবে গেরুয়া শিবির। আর এই বিষয়টি ভালভাবেই জানে বিজেপি। তাই এরপরও বিজেপি নেতারা যেভাবে ডিসেম্বরের কথা বারবার বলে তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, তাতে কিছু একটা ঘটতে পারে এমন ভাবাটা কি খুব অন্যায় হবে? এই প্রশ্ন তুলছেন রাজনীতির কারবারিদের একাংশ।
এই পরিস্থিতিতে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। তবে কি তিনিও বিষয়টি আগাম আঁচ করতে পারছেন বলে এ জাতীয় মন্তব্য করছেন? এ প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠছে। ডিসেম্বর কার্যত দরজায় কড়া নাড়ছে। আর বছরের শেষ মাসটি যত এগিয়ে আসছে ততই কি ঘটতে পারে, কি ঘটতে পারে এমন একটা প্রেক্ষাপট তৈরি হয়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। যা নিয়ে সাধারণ মানুষের কৌতূহলও চোখে পড়ার মতো। তাই আগামী দিনগুলিতে এই বিষয়টি নিয়ে যে চর্চা তুঙ্গে উঠবে তা বলাই যায়।