শুভেন্দু-দিলীপ-সুকান্ত, থ্রি-মাস্কেটিয়ার্সের ভরসাতেই পঞ্চায়েতে ঝাঁপাতে চাইছে বিজেপি? হালে পানি পাবে গেরুয়া শিবির?

শুভেন্দু-দিলীপ-সুকান্ত, থ্রি-মাস্কেটিয়ার্সের ভরসাতেই পঞ্চায়েতে ঝাঁপাতে চাইছে বিজেপি? হালে পানি পাবে গেরুয়া শিবির?

নিজস্ব প্রতিনিধি: কিছুদিন আগেই রাজ্য বিজেপির কোর কমিটিতে রাখা হয়েছে ‘মহাগুরু’ মিঠুন চক্রবর্তীকে। পঞ্চায়েত এবং আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে মিঠুনকে এতটা গুরুত্ব দেওয়ায় তা নিয়ে বিস্তর চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। রাজনীতির কারবারিরা মনে করছেন মিঠুন চক্রবর্তীর স্টার ইমেজকে কাজে লাগানোর জন্যই তাঁকে বড় দায়িত্ব দেওয়া হল। অর্থাৎ পঞ্চায়েতের পাশাপাশি আগামী  লোকসভা নির্বাচনে প্রচার আর জনসম্পর্ক কর্মসূচিতে মিঠুন চক্রবর্তী হতে চলেছেন বিজেপির অন্যতম তুরুপের তাস। তবে মিঠুনকে যে দায়িত্বই দেওয়া হোক না কেন, সাংগঠনিকভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের সঙ্গে মোকাবিলা করতে না পারলে বিজেপি যে একেবারেই সুবিধা করতে পারবে না তা স্পষ্ট।  আর সেই লক্ষ্যে রাজ্য বিজেপি যথারীতি ভরসা রাখছে থ্রি- মাস্কেটিয়ার্সের উপর। তাঁরা হলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। মূলত তাঁদের নেতৃত্বেই পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের মোকাবিলা করার জন্য পরিকল্পনা করতে শুরু করে দিয়েছে গেরুয়া শিবির।

কিন্তু বিজেপি এমনটা ভাবলেও বিষয়টি কতটা মসৃণ ভাবে করা সম্ভব হবে তা নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন রয়েছে। এই তিনজনের মধ্যে মিলমিশের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। নাম না করে তাঁরা একে অপরের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিচ্ছেন এমন ঘটনা মাঝেমধ্যেই দেখা যায়। দিলীপের দাবি তিনি রাজ্য সভাপতি থাকাকালীন বিজেপির যে উত্থান হয়েছিল, তা বর্তমান রাজ্য নেতৃত্ব ধরে রাখতে পারছেন না। যেহেতু দিলীপকে রাজ্য থেকে সরিয়ে সর্বভারতীয় স্তরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তাই তাঁর যে বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট ক্ষোভ রয়েছে তা বহুবার প্রকাশ করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে দিলীপ এটাও বলেছেন সর্বভারতীয় স্তরে নিয়ে যাওয়ার পরেও তাঁর মূল ফোকাস কিন্তু বাংলাতেই থাকবে। আর তাতে এটাই স্পষ্ট হয়েছে যে বর্তমান রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকে গুরুত্ব দিতে চাইছেন না দিলীপ।

এই ধরনের বিবৃতি দেওয়ার জন্য একটা সময় কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব তাঁকে চিঠি দিয়ে সতর্ক পর্যন্ত করেছেন। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতির বদল হয়নি। জানা গিয়েছে বিষয়টি নিয়ে দিল্লিতে দরবার করে একরাশ ক্ষোভ জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। অন্য দিকে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা শুভেন্দু অধিকারীকে যেভাবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এতটা গুরুত্ব দিচ্ছে তাতে আবার অখুশি দিলীপ ও সুকান্ত দু’জনেই। তাই তিনজনকে এক বিন্দুতে নিয়ে আসা যে খুব কঠিন কাজ, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এর উপরে রয়েছে মিঠুন চক্রবর্তী ফ্যাক্টর। উল্লেখ্য মিঠুন একাধিকবার বলেছেন তৃণমূলের বহু বিধায়ক নাকি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। সেই সময় বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করলে শুভেন্দু কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে সুকান্ত কার্যত মিঠুনের বক্তব্যকে সমর্থন করেছিলেন। তাই রাজ্য বিজেপিতে মিঠুনের উত্থান দলে নতুন করে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব উস্কে দেবে কিনা সেই বিষয়টি নিয়েও রাজ্য রাজনীতিতে চর্চা অব্যাহত। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব হাতে হাত মিলিয়ে কতটা লড়াইয়ে নামতে পারেন সেদিকেই চোখ থাকবে রাজনৈতিক মহলের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen − twelve =