নিজস্ব প্রতিনিধি: আগামী লোকসভা নির্বাচনের লক্ষ্যে এখন থেকেই কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি মনে করে আগামী নির্বাচনে গতবারের তুলনায় তাদের কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে পড়তে হবে। কারণ পশ্চিমবঙ্গে দলের শক্তি অনেকটাই কমে গিয়েছে। মহারাষ্ট্রে গতবার তারা শিবসেনার সঙ্গে জোট বেঁধে লড়াই করেছিল। কিন্তু শিবসেনার শিন্ডে শিবির শুধুমাত্র তাদের সঙ্গে রয়েছে। উদ্ধব ঠাকরে বহুদিন আগেই বিজেপির হাত ছেড়েছেন। এছাড়া বিহারে গত লোকসভা নির্বাচনে ৪০টির মধ্যে বিজেপি তথা এনডিএ পেয়েছিল ৩৯টি আসন। কিন্তু বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে দিয়েছে জেডিইউ। তাই বিহারে বিজেপির ফল আগামীদিনে কতটা ভাল হবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। একই ভাবে পাঞ্জাবেও বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করেছে অকালি দল। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যভিত্তিক পৃথক পৃথক পরিকল্পনা করছে গেরুয়া শিবির। সেখানে পশ্চিমবঙ্গের জন্য বিজেপি বিশেষ পরিকল্পনা করে এগোচ্ছে বলে খবর।
গত লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ১৮টি আসনে জয়লাভ করে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছিল বিজেপি। সেই ফল নিয়ে আলোড়ন পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। তবে যে ২৪টি লোকসভা কেন্দ্রে গতবার বিজেপি পরাজিত হয়েছিল, সেগুলিকে এবার বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে গেরুয়া শিবির। আগামী এক বছর ধরে হেরে যাওয়া ২৪টি কেন্দ্রে জনসভা করবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। সেক্ষেত্রে ১২টি আসন চিহ্নিত করে শাহ এবং বাকি ১২টিতে জনসভা করবেন নাড্ডা। জানুয়ারি মাস থেকেই এই কর্মসূচি শুরু হবে বলে বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, ছয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে ২৪টি আসনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নতুন বছর শুরু হলেই তাঁরা কাজে নেমে পড়বেন। লোকসভা কেন্দ্রগুলি ঘুরে, সেখানকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে রিপোর্ট জমা দেবেন তাঁরা। এরপর ধাপে ধাপে ওই ২৪টি কেন্দ্রে নাড্ডা এবং শাহ জনসভা করবেন।
পূর্ব ভারতের যে সমস্ত লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি গতবার হেরে গিয়েছিল সেগুলি নিয়ে গত সপ্তাহে পাটনায় বিশেষ বৈঠকে বসে বিজেপি। পশ্চিমবঙ্গ, বিহার এবং ওড়িশার বিভিন্ন আসন নিয়েও আলোচনা হয়। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির প্রধান পর্যবেক্ষক সুনীল বনশাল ও পর্যবেক্ষক মঙ্গল পান্ডে-সহ অনেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তবে শুধু পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির আসন নয়, মহারাষ্ট্র এবং দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলির বহু লোকসভা আসন নিয়েও চিন্তিত বিজেপি। সবচেয়ে বড় কথা বিহারে বিজেপির সঙ্গ ছেড়েছে নীতিশ কুমারের দল জেডিইউ। তাই গতবার বিহারে এনডিএ যে বিপুল সাফল্য পেয়েছিল, তা আগামী লোকসভা নির্বাচনে পাবে না বলে বিজেপির আশঙ্কা। সব মিলিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে যে আসনগুলি রয়েছে সেগুলি নিয়ে রণকৌশল ঠিক করতে ব্যস্ত বিজেপি নেতৃত্ব। আসলে বিজেপি চায় একার জোরেই ম্যাজিক ফিগার ২৭২ পেরিয়ে যেতে। গতবার তারা একাই ৩০০ পেরিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু চব্বিশের লড়াই আরও কঠিন হবে বলে নেতৃত্ব মনে করছেন। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে সবচেয়ে বেশি চিন্তা রয়েছে তাদের। তাই দলের দুই শীর্ষ নেতা অমিত শাহ এবং জেপি নাড্ডা চব্বিশটি লোকসভা কেন্দ্রে পালা করে সভা করতে চলেছেন নতুন বছর জুড়ে। সেই সভাগুলি থেকে বিজেপি কতটা ডিভিডেন্ড পায় সেটা সময়ই বলবে।