Aajbikel

প্রাক্তন রাজ্যপালের দেখানো পথ অনুসরণ করবে না তো বর্তমান রাজ্যপাল? দিল্লি সফর নিয়ে শুরু চর্চা!

 | 
রাজভবন

কলকাতা: রাজ্যপাল প্রত্যেকটি রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। তাই তাঁর সঙ্গে রাজনীতির কোনও প্রত্যক্ষ যোগাযোগ থাকবে না, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বর্তমান উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড় যখন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল ছিলেন তখন তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রতিদিন সরব হতেন তৃণমূল নেতারা। তৎকালীন রাজ্যপাল বিজেপি'র হয়ে কাজ করতেন, এমন অভিযোগ নিয়মিত করতে শোনা যেত তৃণমূলকে। কারণ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে হাজারো অভিযোগ নিয়ে তৎকালীন রাজ্যপালের দ্বারস্থ হতেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা। তাতে নবান্নের সঙ্গে রাজভবনের সংঘাত নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু গত বছরের শেষ দিকে সিভি আনন্দ বোস যখন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হয়ে এলেন তখন থেকেই দেখা যাচ্ছে রাজভবনের সঙ্গে নবান্নের মসৃণ সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। একাধিক ঘটনায় এটা স্পষ্ট হয়েছে অতীতে নবান্ন এবং রাজভবনের মধ্যে যে নজিরবিহীন সংঘাত দেখা যেত তা এখন উধাও। স্বাভাবিকভাবেই বর্তমান রাজ্যপালের ভূমিকায় খুশি নয় বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব।

এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপাল হঠাৎই যখন দিল্লি সফর করলেন তখন অনেকেই ভেবেছিলেন হয়ত কেন্দ্রের তলব পেয়েই তিনি সেখানে গিয়েছেন। তাঁকে কেন্দ্র 'সতর্ক' করে দেবে, এমন চর্চা শুরু হয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে। যথারীতি গোটা বিষয়টির উপর সতর্ক নজর রেখেছিল বঙ্গ বিজেপি। কিন্তু কোথায় কি, দেখা গেল রাজ্যপালের দিল্লি সফরের কোনও রাজনৈতির চিহ্নটুকুও নেই৷ সেটাই হওয়া স্বাভাবিক৷

রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছেন, শুরু থেকেই বর্তমান রাজ্যপাল যদি প্রাক্তন রাজ্যপালের পথ অনুসরণ করতেন, তাহলে আগের পরিস্থিতি পুনরায় তৈরি হতো। কিন্তু বর্তমান রাজ্যপাল ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের আস্থা অর্জন করেছেন। তাই প্রশ্ন আগামী দিনে রাজ্যপালকে প্রাক্তন রাজ্যপালের দেখানো পথে চলবে না তো? সেক্ষেত্রে তৃণমূল তখন এর প্রতিবাদ করতে পারবে তো? কারণ বর্তমান রাজ্যপাল সম্পর্কে শাসকদল ইতিমধ্যেই দরাজ সার্টিফিকেট দিয়ে দিয়েছে।

লোকসভা নির্বাচনের এক বছরের সামান্য কিছু বেশি সময় বাকি। তার আগে রয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। জগদীপ ধনকড় যখন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল ছিলেন, তখন এখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত সরব হতেন। এমনকি দিল্লি সফরে গিয়েও তিনি রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন করে পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সোচ্চার হয়েছিলেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বাংলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে একটি মন্তব্যও করেননি। তবে, হাইকোর্টে তৈরি হওয়া নজিরবিহীন অচলাবস্থা নিয়ে সরব হতে দেখা গিয়েছে রাজ্যপালকে৷ এই অবস্থায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিকে সবার নজর থাকবে। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বিজেপি। তাই আগামী দিনে বিজেপি যদি ফের সেই দাবিতে রাজভবনের দ্বারস্থ হয়, তখন সিভি আনন্দ বোস বিষয়টি নিয়ে কি বলবেন সেটি নিয়েও যথেষ্ট কৌতূহল রয়েছে রাজনৈতিক মহলের। সব মিলিয়ে বর্তমান রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে কাটাছেঁড়া কিন্তু চলছেই৷

Around The Web

Trending News

You May like