নেতাজির জন্মদিবসে কলকাতায় সভা করবেন মোহন ভাগবত, জাতীয়তাবাদ আবেগ জাগিয়ে তোলাই প্রধান উদ্দেশ্য?

নেতাজির জন্মদিবসে কলকাতায় সভা করবেন মোহন ভাগবত, জাতীয়তাবাদ আবেগ জাগিয়ে তোলাই প্রধান উদ্দেশ্য?

নিজস্ব প্রতিনিধি: দেড় বছরের মধ্যেই লোকসভা নির্বাচন। গত নির্বাচনে বিজেপি একাই তিনশোর গণ্ডি পার করেছিল। সেই সাফল্য ধরে রাখতে এখন থেকেই যা যা পরিকল্পনা করা দরকার তা করতে শুরু করে দিয়েছে গেরুয়া শিবির। রাজ্য ভিত্তিক ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সেখানে পশ্চিমবঙ্গ নিয়েও বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। বিজেপি নেতারা জানেন পশ্চিমবঙ্গে গতবার তাঁরা যে সাফল্য পেয়েছিলেন তার কাছাকাছি যাওয়াও এবার বেশ মুশকিল। কারণ একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর পশ্চিমবঙ্গে ধারাবাহিকভাবে বিজেপির শক্তিক্ষয় হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চলতি মাসেই রাজ্যে আসছেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। সাংগঠনিক বৈঠকের পাশাপাশি বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গেও আলাদা করে তিনি কথা বলবেন বলে খবর। আর এই সফরে এসেই ২৩ জানুয়ারি নেতাজি জন্মদিবসে শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে ভাগবত প্রকাশ্য সভা করবেন। লক্ষ্য একটাই বাংলার মানুষের মনে জাতীয়তাবাদের আবেগকে আরও উস্কে দেওয়া।

 

মোহন ভাগবত নেতাজির জন্মদিবসকে সামনে রেখে যে বার্তা দেবেন তার পাশাপাশি লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য জুড়ে অন্ততপক্ষে ছটি রথযাত্রা কর্মসূচি নিতে চলেছে বিজেপি। সাগর থেকে পাহাড় জুড়ে রথযাত্রা কর্মসূচিগুলির উদ্বোধনে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা-সহ অন্যান্য শীর্ষ নেতৃত্ব। মূলত হিন্দুত্ব আবেগকে জাগিয়ে তোলার জন্যেই এই রথযাত্রা কর্মসূচি সামনে রাখছে বিজেপি। তাই লোকসভা নির্বাচনের আগে গেরুয়া শিবিরের জোড়া ফলা জাতীয়তাবাদের আবেগ ও হিন্দুত্ববাদ রাজ্যবাসী প্রত্যক্ষ করতে চলেছেন। 

 

পশ্চিমবঙ্গে গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ১৮ টি আসনে জিতে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। এরপরই বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখে অন্তত ২০০টি আসনে জিতে। কিন্তু তারা থেমে যায় ৭৭-এ। অর্থাৎ সেঞ্চুরিরও ধারেকাছে পৌঁছতে পারেনি তারা। তখন থেকেই বিজেপির শক্তিক্ষয় হতে শুরু করে। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে সেই পদে আনা হয় বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারকে। এরপরই রাজ্য বিজেপিতে তীব্র গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দেখা দেয়। পুরসভার পাশাপাশি লোকসভা এবং বিধানসভার উপনির্বাচনে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে দাঁত ফোটাতে পারেনি। প্রত্যেকটি ভোটেই জোড়াফুল ঝড় চলেছে। কিন্তু বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে তৃণমূল যেভাবে বিদ্ধ হয়েছে সেখানে বিজেপি মাঠে নেমে আন্দোলন করে কিছুটা হলেও হারানো জায়গা ফিরে পেয়েছে। সেই জায়গা থেকে গেরুয়া শিবির মনে করছে আরএসএস প্রধান এখন থেকেই যদি বাংলায় এসে মূল্যবান পরামর্শ দেন, তা কাজে লাগিয়ে অনেকটাই তারা ক্ষত মেরামত করতে পারবেন। সেই সঙ্গে থাকছে রথযাত্রা কর্মসূচি। বিজেপি নিশ্চিত এই জোড়া ফলা পার করে দেবে লোকসভা নির্বাচনকে। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে সংগঠনকে যেভাবে বিজেপি ঝাঁকুনি দিতে চাইছে তাতে কর্মী সমর্থকরা অনেকটাই উজ্জীবিত হবেন বলে নেতৃত্বের বিশ্বাস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *