নিজস্ব প্রতিনিধি: ফের রাজনৈতিক ময়দানে ‘মহাগুরু’। একুশের নির্বাচনের প্রচারে মিঠুন চক্রবর্তীকে ব্যাপকভাবে কাজে লাগিয়েছিল বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একুশের নির্বাচনের আগে ব্রিগেডে যে সমাবেশ করেন সেই মঞ্চেই গেরুয়া শিবিরে যোগদান করেছিলেন মিঠুন। তারপর ধারাবাহিকভাবে কলকাতা থেকে জেলা জুড়ে মিঠুন প্রচার করেছেন। কিন্তু এরপর দীর্ঘ সময় মিঠুন রাজনৈতিক বৃত্তের বাইরে চলে গিয়েছিলেন। তবে নতুন করে নিজেকে মেলে ধরতে শুরু করেছেন তিনি।
বাঁকুড়া থেকে আসানসোল, পুরুলিয়া থেকে বীরভূম, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মিঠুন প্রচার শুরু করে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, জনসভায় বা সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এমন কিছু বলছেন যাতে বিজেপির ‘স্ট্যান্ড পয়েন্ট’ কি হতে পারে তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। বস্তুত যে কথা রাজ্য বা কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতৃত্বের তরফ থেকে বলা উচিত, তা শোনা যাচ্ছে মিঠুনের মুখে। যেমন মহাজোট গঠনের কথা বলছেন মিঠুন। তাঁর দাবি তৃণমূলকে হারাতে পারে মহাজোট। তার মানে এটাই দাঁড়ায় পঞ্চায়েত ও আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির পাশে দাঁড়াবে কংগ্রেস এবং বামেরা। কিন্তু মিঠুন ভুলে গিয়েছেন এই দুটি দলই বিজেপির সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক শত্রু। তা সত্ত্বেও এমন কথা বলছেন তিনি কীভাবে? এই প্রশ্ন যথারীতি উঠছে। তবে কি মিঠুন রাজ্য বিজেপির অন্যতম ‘ডিসিশন মেকার’ হতে চাইছেন? এই জল্পনা প্রত্যাশিত ভাবে শুরু হয়েছে।
তাই প্রশ্ন, আগামী দিনে মিঠুনই কী রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখ হতে চলেছেন? সেই কারণেই তাঁকে প্রচারে এতটা ‘স্পেস’ দিচ্ছে বিজেপি? নাকি গ্রাম বাংলায় বিজেপির সংগঠন বা জনসমর্থন এতটাই কমে গিয়েছে যে মিঠুনের মতো মেগা তারকাকে সামনে রেখে জমি দখলের চেষ্টা করছে গেরুয়া শিবির? এই চর্চা চলছে রাজনৈতিক মহলে।
বর্তমানে দেখা যাচ্ছে মিঠুন জেলা সফরে গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন। শুনছেন তাঁদের অভাব অভিযোগের কথা। বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় আসলে কীভাবে সেই সমস্যার সমাধান করা হবে সেই প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন তিনি। এমনকী রাজ্যে প্রচুর শিল্প ও ঢালাও কর্মসংস্থান হবে বলেও দাবি করছেন মিঠুন। তাই সবমিলিয়ে এটা মনে করা যেতেই পারে যে মিঠুন যেভাবে মন্তব্য করছেন, তাতে তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছ থেকে হয়ত এমনটাই আশ্বাস পেয়েছেন যে আগামী দিনে তাঁকে রাজ্য বিজেপির অন্যতম মুখ হিসেবে তুলে ধরা হবে। পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের এখনও সাড়ে তিন বছর দেরি আছে। তবে কি এখন থেকেই মিঠুনকে মুখ্যমন্ত্রী মুখ হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে গেরুয়া শিবির? যদিও বিজেপি সূত্রে খবর, এমন কোনও ব্যাপার নেই। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মিঠুন চক্রবর্তীর ‘স্টারভ্যালু’কেই সুকৌশলে কাজে লাগানো হচ্ছে। তাই সেখানে অন্য কিছু ধরে নেওয়ার কারণ নেই। তবে যাই হোক না কেন পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে মিঠুনই যে বিজেপির তুরুপের তাস, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।