পার্থর কেন্দ্র বেহালা পশ্চিমে সভা করবেন মমতা? তুঙ্গে জল্পনা!

পার্থর কেন্দ্র বেহালা পশ্চিমে সভা করবেন মমতা? তুঙ্গে জল্পনা!

নিজস্ব প্রতিনিধি: পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতারের পর রাজনৈতিক মহলের বিশেষ নজর রয়েছে বেহালায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মসূচির দিকে।

ইডির হাতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পর তৃণমূলের অস্বস্তি  বহু গুণে বাড়িয়ে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। যা নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। এই অবস্থায় রবিবার প্রাক স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বেহালার ম্যান্টনে একটি কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই জায়গাটি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিধানসভা কেন্দ্র বেহালা পশ্চিমের অন্তর্গত। উল্লেখ্য মন্ত্রিত্ব এবং দলের সমস্ত পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হলেও পার্থ এখনও বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক রয়েছেন। তাই রবিবার বেহালা পশ্চিমে গিয়ে মমতা কি বার্তা দেন তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। উল্লেখ্য এই কর্মসূচি দীর্ঘদিন ধরে পালন করে আসছে তৃণমূল। বলা ভাল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এতদিন এই কর্মসূচি পালিত হয়ে এসেছে ম্যান্টনে। কিন্তু এবার বিশেষ পরিস্থিতিতে পার্থ না থাকা সত্ত্বেও মমতার সেই কর্মসূচিতে গিয়ে বক্তব্য রাখা অত্যন্ত  তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সেদিন রাত বারোটায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে প্রতিবছরের মতো স্বাধীনতা দিবস পালন করবেন বেহালার তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু তৃণমূল সূত্রে খবর পতাকা উত্তোলন কর্মসূচির আগেই মমতা যাবেন সেখানে। তাই সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মমতা কি বলেন তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।

তিন বছর আগের ঘটনা। সেবার স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন ম্যান্টনে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিধায়ক কার্যালয়ের কাছে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ঘটনাচক্রে সেদিনই দিল্লিতে গিয়ে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। আর মমতা সেদিন ম্যান্টনের ওই মঞ্চ থেকেই বেহালা পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের সংগঠন দেখার ভার শোভনের স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়কে দেন। এরপর একুশের বিধানসভা নির্বাচনে সেই বেহালা পূর্ব কেন্দ্র থেকেই তৃণমূলের টিকিটে জয়লাভ করে রত্না বিধায়ক হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে মমতা রবিবার বেহালা পশ্চিমে গিয়ে দলীয় কর্মীদের বিশেষ কোনও বার্তা দেন কিনা তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে সবার।

বর্তমানে পার্থ জেল হেফাজতে রয়েছেন। কিছুদিন আগেই জল্পনা ছড়ায় জামিন পাওয়ার লক্ষ্যে নিজের প্রভাবশালী তকমা  ঘোঁচাতে পার্থ নাকি বিধায়ক পদ ছেড়ে দিতে চেয়েছেন। যদিও এখনও পর্যন্ত সেটি বাস্তবায়িত হয়নি। অর্থাৎ পার্থ বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক রয়ে গিয়েছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও নিত্য প্রয়োজনে বিধায়কের কাছে যেতে পারছেন না এলাকার মানুষ। এই অচলাবস্থা কতদিন চলবে তা নিয়ে চিন্তায় সবাই। সবচেয়ে বড় কথা যেভাবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি টাকা এবং অলঙ্কার উদ্ধার হয়েছে, তাতে চরম অস্বস্তিতে পড়েছেন বেহালা পশ্চিমের তৃণমূল নেতৃত্ব। এই অবস্থায় তাঁরা চাইছেন রবিবার বেহালা গিয়ে মমতা যাতে এমন কিছু বলেন যাতে চাঙ্গা হয় এলাকার তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব মনে করছেন মমতা বেহালা যাওয়ার পরেই দলীয় কর্মীদের মনোবল বাড়বে। উল্লেখ্য মমতা টানা কুড়ি বছর দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ ছিলেন। বেহালা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রটি এই লোকসভা কেন্দ্রেরই অন্তর্গত। তাই মমতার সঙ্গে বেহালার সম্পর্ক নতুন কিছু নয়। বাম আমলেও বেহালা তৃণমূলের দুর্গে পরিণত হয়। ২০০১ সাল থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বেহালা পশ্চিম কেন্দ্র থেকে টানা জিতে এসেছেন। কিন্তু পার্থ কাণ্ডের জেরে বেহালা পশ্চিমের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা খুবই মুষড়ে পড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে সকলেই মমতার বেহালা  কর্মসূচির দিকে তাকিয়ে। সেখানে নেত্রী কি বার্তা দেন এখন সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *