নিজস্ব প্রতিনিধি: গত লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলি একমঞ্চে আসার চেষ্টা করল শেষ পর্যন্ত সেটি বাস্তবায়িত হয়নি। তবে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ডিএমকে প্রধান তথা তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন সেই সময় প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে রাহুল গান্ধীর নাম জোরের সঙ্গে বলেছিলেন। পরবর্তীকালে দেখা যায় কংগ্রেস মাত্র ৫২টি আসনে জিতেছে। আর তারপর থেকেই তৃণমূল লাগাতার কংগ্রেসকে বিভিন্ন ইস্যুতে আক্রমণ করে গিয়েছে।
বিজেপি বিরোধিতার ক্ষেত্রে কংগ্রেসের নেতৃত্বে নয়, আঞ্চলিক দলগুলি নিজেদের মতো করে জোট বাঁধলে অনেক ভাল ফল হবে, এমনটাই বারবার বলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের অস্থায়ী রাজ্যপাল লা গণেশনের একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চেন্নাই গিয়ে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মমতা। আর তারপরই মুখ্যমন্ত্রীর তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য,”দুজন রাজনীতির মানুষ দেখা হলে রাজনীতির কথা তো হবেই”। উল্লেখ্য বেশ কিছুদিন ধরে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রা করছে। কংগ্রেসের দাবি অভূতপূর্ব সাড়া পাচ্ছে তারা। তবে কি বিজেপি বিরোধী ঐক্য শক্তি বাড়াচ্ছে? এ প্রসঙ্গে কংগ্রেসের নাম না করে মমতাকে তাৎপর্যপূর্ণভাবে বলতে শোনা গিয়েছে,”আমি আঞ্চলিক দলগুলির নেতাদের সঙ্গে কথা না বলে এখনই কিছু বলতে পারব না। আঞ্চলিক দলগুলি চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি সব আঞ্চলিক দলকে বিশ্বাস করি। জয় নিশ্চিত করতে সমস্ত আঞ্চলিক দলগুলিকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।” এভাবেই মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন বিজেপি বিরোধিতার ক্ষেত্রে কংগ্রেসের লিডারশিপ তাঁরা মানবেন না।
এই অবস্থায় মমতার সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ বৈঠক হয়েছে স্টালিনের। তামিলনাড়ুর জোট সরকারে কংগ্রেস রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই রাহুল গান্ধীর সঙ্গে স্টালিনের ব্যক্তিগত সম্পর্ক অত্যন্ত মসৃণ। কিন্তু আগামী দিনে বিজেপি বিরোধিতার লক্ষ্যে সম্মিলিতভাবে বিরোধী জোটকে নেতৃত্ব দানের ক্ষেত্রে কংগ্রেসকে যে একেবারেই ধর্তব্যের মধ্যে রাখতে চায় না তৃণমূল, তা ইদানিং দলীয় নেতৃত্বের কথাতেই পরিষ্কার হয়েছে। তাই মমতা-স্টালিনের বৈঠক নিয়ে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে বেশ চর্চা শুরু হয়েছে। যদিও মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তিনি শুধু এটাই বলেছেন দু’জন রাজনীতিকের মধ্যে কথা হলে রাজনীতি নিয়ে কথা তো হবেই। রাজনৈতিক মহল মনে করছে গুজরাট এবং হিমাচল প্রদেশের নির্বাচনের ফলাফলের দিকে লক্ষ্য রাখছে তৃণমূলে। সেখানে কংগ্রেস যদি শোচনীয় ভাবে পর্যুদস্ত হয় তখন আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে আঞ্চলিক দলগুলির গুরুত্ব যে আরও বহুগুণে বেড়ে যাবে তা স্পষ্ট। তাই জোট রাজনীতির গতিপথে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে নতুন বাঁক আসবে বলেই মনে করা হচ্ছে।