Aajbikel

মমত-অভিষেকের ধারণাই সত্যি করে ফের ইডির তলব? কী ব্যাখ্যা দিচ্ছে সিপিএম-বিজেপি?

 | 
মমতা

নিজস্ব প্রতিনিধি: তৃণমূলের সভা সফল হলেই বিরোধীরা নড়ে চড়ে বসে। কোনও না কোনও ঘটনা ঘটায়। এবারও সেটা ঘটতে পারে। গত সোমবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে মেয়ো রোডের মঞ্চ থেকে এমন আশঙ্কা করতে দেখা যায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সমাবেশে ভিড়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন," এমন সমর্থন অন্য কারও আছে? এই যে আজকে এত বড় সমাবেশ, আপনারা আমার কথা লিখে রাখুন, চার-পাঁচদিনের মধ্যে আবার কিছু একটা করবে"। একই কথা সেদিন বলতে শোনা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি বলেছিলেন," এই তো অভিষেক এত ভাল বক্তৃতা করল। কালই হয়ত একটা নোটিস ধরিয়ে দেবে!"

ধর্মতলায় ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবস সমাবেশের পরদিনই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। সেই সূত্রে বিজেপিকে নিশানা করে অভিষেক বলেন," ২১ জুলাই আমাদের সমাবেশ হল। ২২ জুলাই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে ইডিকে পাঠিয়ে দেওয়া হল। ২২ জুলাই কেন? কেন ২৩ জুলাই নয়? কেন ২৪ জুলাই নয়?" অর্থাৎ অভিষেক এটাই বলতে চেয়েছেন তৃণমূলের পক্ষে জনসমর্থন বেশি দেখার পরেই বিজেপির অঙ্গুলিহেলনে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা নতুন করে সক্রিয়তা বাড়াবে। তিনি বলেন, "চার পাঁচ দিনের মধ্যে ওরা আবার একটা কিছু করবে। কেন করবে? তার কারণ ওদের রাজনৈতিকভাবে লড়ার ক্ষমতা নেই। দিল্লিতে সব চুড়ি পরে বসে আছে। আর এখানে  ইডি আর সিবিআইকে লাগিয়েছে। এসো না মাঠে ময়দানে লড়াই হবে। দু'জনকে গ্রেফতার করে তৃণমূলকে শেষ করা যাবে না। বাংলায় সংগ্রাম চলবেই।"

এরপরই দেখা গেল মমতা- অভিষেকের ধারণা সত্যি করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি ফের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে অভিষেককে। এটা কি নিছকই সমাপতন, নাকি এর পিছনে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা কাজ করছে? এই চর্চা যথারীতি শুরু হয়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে। বিষয়টি নিয়ে বিজেপির কটাক্ষ,"মুখ্যমন্ত্রী আগে বলেছেন ইডি-সিবিআইয়ের মধ্যে তাঁর লোক আছে। তিনি সব খবর পান। তাই তিনি যা যা জানবেন তা খাঁটি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি"। অন্যদিকে সিপিএমের বক্তব্য, "অভিষেককে ইডি ডেকেছে। এ তো নতুন খবর নয়, মুখ্যমন্ত্রী আগেই তালিকা ঘোষণা করেছেন। সেই মতোই সব হচ্ছে। উনি কি জ্যোতিষী, নাকি এই গোটা ব্যাপারের মধ্যে তিনিও আছেন?" 

অভিষেক প্রকাশ্যে মঞ্চ থেকে বলেছেন গরু পাচারের টাকা সরাসরি গিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে। যা নিয়ে কেন্দ্র- রাজ্যের মধ্যে সংঘাত নতুন মাত্রা নিয়েছে। মমতা-অভিষেক জুটি বুঝিয়ে দিচ্ছেন 'অফেন্স ইজ দ্যা বেস্ট ডিফেন্স' নীতিতেই তাঁরা বিজেপিকে আক্রমণ করে যাবেন। যদিও ইডির বক্তব্য এই দুর্নীতি কাণ্ডে তাদের হাতে এমন সব বিস্ফোরক তথ্য এসেছে, যার ভিত্তিতেই অভিষেককে জেরা করার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু এটা পরিষ্কার দুর্নীতি কাণ্ডের তদন্ত প্রসঙ্গকে ছাপিয়ে গিয়ে গোটা বিষয়টিকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলেছে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার তত্ত্ব। এই জায়গা থেকে শুক্রবার অভিষেক হাজিরা দেবেন ইডি দফতরে। সেখানে নতুন কোনও নাটক দেখা যায় কিনা এখন তারই অপেক্ষা।

Around The Web

Trending News

You May like