নিজস্ব প্রতিনিধি: পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতি ঘিরে হঠাৎই বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে ইসলামাবাদ। কোন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেখানে? আসলে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে স্থানীয়দের বিক্ষোভে যথেষ্ট চাপে পড়ে গিয়েছে ইসলামাবাদ। গিলিগিট-বাল্টিস্তানের পথে নেমেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রাস্তায় নেমে জনতা পাক সেনার বিরুদ্ধে তীব্র বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তাঁদের অভিযোগ পাক সেনা ওই ভূ-খণ্ড জোর করে দখল করতে চাইছে। গত সপ্তাহে একাধিকবার ওই অঞ্চলে পাকিস্তানের সেনা ও রেঞ্জার্স ও ফ্রন্টিয়ার কোর বাহিনীকে এমন বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে। পাক সেনার বিরুদ্ধে জনতা বিক্ষোভ দেখাচ্ছে ইতিমধ্যেই সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এমনকী ভিডিওতে এটাও দেখা গিয়েছে যে সেখানকার জনতার একাংশ ভারতের পক্ষে স্লোগান দিচ্ছেন। গোটা ঘটনায় সেখানে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
এই প্রথম নয়, এর আগেও বহুবার ওই অঞ্চল উত্তপ্ত হয়েছে। কিন্তু গত আগস্ট মাস থেকে গোটা বিষয়টি অন্য মাত্রা পেয়েছে পাকিস্তান সরকারের একটি সিদ্ধান্তের জেরে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সরকার সে দেশের সংবিধানে কিছু সংশোধনী আনতে চাইছে। জানা গিয়েছে এই সংশোধনীর পর পাক অধিকৃত কাশ্মীরের আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা পুরোটাই ইসলামাবাদের হাতে চলে যাবে। তখন সেখানকার স্থানীয় প্রশাসনের হাতে যে ক্ষমতা রয়েছে তা আর থাকবে না। সেই কারণেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন গিলিগিট-বাল্টিস্তানের মানুষ। তাঁদের দাবি জোর করে উচ্ছেদ করা চলবে না। এ বিষয়ে পাকিস্তানের মানবাধিকার কর্মী সাবির চৌধুরীর অভিযোগ, এভাবে সংবিধান সংশোধন করে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের প্রাকৃতিক সম্পদ জোর করে দখল করতে চাইছে ইসলামাবাদ। সব মিলিয়ে যথেষ্ট চাপে পড়েছে পাকিস্তান।
এমনিতেই ধারাবাহিকভাবে সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। পাকিস্তানের কারণে সীমান্তে ধারাবাহিক সমস্যা রয়ে গিয়েছে ছে বলে ভারত প্রমাণ-সহ বহুবার সেই দাবি করেছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের মঞ্চেও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এই সংক্রান্ত বহু অভিযোগ ভারত বারবার তুলে ধরেছে। তাতে মুখ পুড়েছে ইসলামাবাদের। এমনিতেই অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পাকিস্তান অত্যন্ত পিছিয়ে পড়েছে। করোনা পরিস্থিতির পর তাদের সমস্যা বহু গুণে বেড়েছে। চাকরি থেকে খাদ্যাভাব, সব ধরনের সমস্যায় ভুগছে দেশটি। এবার পাক অধিকৃত কাশ্মীরে যেভাবে পাকিস্তান সরকার ও পাক সেনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সেখানকার মানুষ, যেভাবে ভারতের পক্ষে স্লোগান উঠছে, তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। গোটা ঘটনায় যথেষ্ট অস্বস্তি বেড়েছে শাহবাজ শরিফ সরকারের। এখন তারা পরিস্থিতির সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে। যদিও ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে এই সমস্যা মিটবে না। তাই পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সমস্যা নিয়ে পাকিস্তান সরকারের চিন্তা যে রয়েই গেল সেটা স্পষ্ট।