এবার ইডির জালে অনুব্রত! পঞ্চায়েত ভোট পর্বে জেলেই থাকবেন কেষ্ট?

এবার ইডির জালে অনুব্রত! পঞ্চায়েত ভোট পর্বে জেলেই থাকবেন কেষ্ট?

নিজস্ব প্রতিনিধি: দীর্ঘদিন ধরে জেলে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। খোদ ক্যাপ্টেন জেলে থাকায় বীরভূমে টিম-তৃণমূলের মনোবল দিন দিন ভেঙে পড়ছে। এই অবস্থায় নতুন করে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করল ইডি। স্বাভাবিকভাবেই সমস্যা আরও বাড়ল কেষ্টর। এর আগে অনুব্রতর আইনজীবীরা বহু চেষ্টা করেও আদালত থেকে জামিনের নির্দেশ নিয়ে আসতে পারেননি। পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় অনুব্রত জেল থেকে জামিনে আদৌ মুক্তি পাবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তাই অনুব্রত যদি পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় জেলে থাকেন তবে দল কতটা ভাল ফল করবে বীরভূমে, এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ব্যস্ত রাজনৈতিক মহল। বীরভূম জেলা জুড়ে আপাতত এই চর্চাই চলছে। কিছুদিন আগের কথা।

আদালতের এজলাসে বসেই অনুব্রত দলীয় কর্মীদের প্রতি যে কড়া বার্তা দিয়েছেন তাতে গোটা বিষয়টি অন্য মাত্রা পেয়েছিল। সেদিন অনুব্রতকে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হয়েছিল। সেখানে দেখা করতে এসেছিলেন তাঁর জেলার তৃণমূলের কিছু নেতা-কর্মী। পঞ্চায়েত ভোটে দলের রণকৌশল নিয়ে সেখানেই তাঁদের নির্দেশ দিতে দেখা যায় কেষ্টকে। এমনকী এটাও বলেছেন দলে কোনও রকম গ্রুপবাজি চলবে না। সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, তিনি নিশ্চয়ই সারা জীবন জেলে থাকবেন না। তাই বীরভূমের ফেরার পর তিনি সেই ধরনের কর্মীদের ডানা ছেঁটে দেবেন। কিন্তু তখন অনুব্রত এটা ভাবতেও পারিনি যে তাঁকে ভবিষ্যতে ইডি গ্রেফতার করবে। আর তাতেই জেল থেকে বেরনোর রাস্তা ক্রমশ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তাঁর।

রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছেন অনুব্রতর অনুপস্থিতিতে তৃণমূল বীরভূমে যথেষ্ট সমস্যার মধ্যে পড়বে। অনুব্রত তাঁর ব্যক্তিগত ক্যারিশ্মায় যেভাবে ‘ভোট মেশিনারি’ প্রয়োগ করে তৃণমূলকে একের পর এক নির্বাচনে বিপুল সাফল্য এনে দিয়েছিলেন, তা তৃণমূলের অন্য নেতারা কতটা পারবেন সেটা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। বর্তমানে ইডি অনুব্রতকে গ্রেফতার করার পর তাঁকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে নতুন করে জেরা করতে চাইবে। সেক্ষেত্রে অনুব্রতকে তাঁর প্রাক্তন দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার সম্ভাবনাও রয়েছে। সেই সঙ্গে সিবিআইয়ের মতো আগামী দিনে অনুব্রতকেও ইডি টানা নিজেদের হেফাজতে বা জেল হেফাজতে চাইবে সেটাও স্পষ্ট। সব মিলিয়ে অনুব্রতর সামনে আলোর দিশা সেভাবে দেখা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে অনুব্রতর মতো দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতাকে যদি সত্যিই জেলে থাকতে হয়, তাতে বীরভূম জেলায় তৃণমূলের ভাল ফল করা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবে। আর গোটা ঘটনা নিয়ে তৃণমূলের অভিযোগ বিজেপির ইশারায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে অনুব্রতকে এভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। যদিও গেরুয়া শিবির এই অভিযোগ অস্বীকার  করছে। সব মিলিয়ে অনুব্রত এপিসোড আগামী দিনে কোন পথে যায় এখন সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × three =