তৃণমূল কি আইএসএফ’কে নিয়ে চিন্তিত? সংখ্যালঘু ভোটে ফাটল ধরাতে পারে আইএসএফ?

তৃণমূল কি আইএসএফ’কে নিয়ে চিন্তিত? সংখ্যালঘু ভোটে ফাটল ধরাতে পারে আইএসএফ?

নিজস্ব প্রতিনিধি: গত বিধানসভা নির্বাচনে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় বিরোধীরা পুরোপুরি হোয়াইটওয়াশ হয়ে গিয়েছিল। একটি বাদ দিয়ে কোনও বিধানসভা কেন্দ্রে তারা জিততে পারেনি। একমাত্র ভাঙড় বিধানসভা কেন্দ্রে থমকে গিয়েছিল তৃণমূলের জয়রথ। সেখানে আইএসএফের কাছে পরাজিত হয় শাসক দল। ভাঙড়  থেকে তৃণমূলকে হারিয়ে বিধানসভায় যান আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। পরবর্তীকালে বিভিন্ন ইস্যুতে বারবার উত্তপ্ত হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় অঞ্চল। এই পরিস্থিতিতে আইএসএফের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ধর্মতলায় যে ধুন্ধুমার কাণ্ড হয়েছে তার জেরে গ্রেফতার হয়েছেন নওশাদ-সহ দলের বহু নেতা কর্মী। যেভাবে আইএসএফ দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়-সহ একাধিক অঞ্চলের পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন সংখ্যালঘু অধ্যুষিত অঞ্চলে ‘অ্যাগ্রেসিভ’ ভঙ্গিতে রাজনীতি করছে তাতে চিন্তায় রয়েছে তৃণমূল। কারণ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রায় পুরো ভোটটাই তৃণমূল বেশ কয়েক বছর ধরে পেয়ে আসছে। তৃণমূলের আশঙ্কা পঞ্চায়েত নির্বাচনে সংখ্যালঘু ভোটের একচেটিয়া তারা এবার নাও পেতে পারে। সেক্ষেত্রে সেই ভোটে ভাঙন ধরাতে পারে আইএসএফ। আর সেটা নিয়েই বেশ চিন্তায় পড়ে গিয়েছে রাজ্যের শাসক দল। 

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির পাশাপাশি কয়লা পাচার, গরু পাচার-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাজ্যের শাসকদলের একাংশের বিরুদ্ধে বহু অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সেটা নিয়ে বেজায় বিব্রত তৃণমূল।  এই আবহের মধ্যে আবাস যোজনাতেও তৃণমূলের বহু নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। যে সমস্ত ঘটনায় ক্ষুব্ধ হিন্দু, সংখ্যালঘু-সহ রাজ্যের সমস্ত ধর্মের একটা বড় অংশের মানুষ। তাঁদের একটাই দাবি প্রকৃত প্রাপকরাই যেন আবাস যোজনা প্রকল্পের মাধ্যমে বাড়ি পান। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে বহু দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের একাংশের বিরুদ্ধে। এই অবস্থায় আইএসএফের দাবি পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলকে প্রত্যাখ্যান করবেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একটা বড় অংশ। আর সেই ভোট চলে আসবে আইএসএফের কাছে। এমনটাই বলছেন দলীয় নেতৃত্ব। আর সেই কারণেই আইএসএফের কর্মসূচিতে শাসকদলের ইশারায় পুলিশ বলপ্রয়োগ করছে বলে আইএসএফ নেতৃত্ব দাবি করছেন।

পুলিশ নওশাদ সিদ্দিকীকে গ্রেপ্তার করার পর নতুন করে আন্দোলনে নামছে আইএসএফ। বুধবার কলকাতায় প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছে তারা। শুধু তাই নয় সোমবার হুগলির জাঙ্গিপাড়ায় ফুরফুরা শরিফে আইএসএফের রাজ্য কমিটির বৈঠকে পীরজাদা কাশেম সিদ্দিকী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন নওশাদকে মুক্তি না দিলে তাঁরা কলকাতা অচল করে দেবেন। এতে সংখ্যালঘু সমাজের কাছে শাসক দল বিরোধী বার্তা যাচ্ছে বলেই রাজনৈতিক মহল মনে করছে। তাই অনেকেরই ধারণা পঞ্চায়েত ভোটে এর প্রভাব পড়বে। বহু জেলায় তৃণমূলের পাশ থেকে সংখ্যালঘু সমাজের একটা বড় অংশ সরে যাবে বলে, সেই অংশের মত। তাই এটা স্পষ্ট রাজ্য রাজনীতিতে আইএসএফের নতুন করে যেভাবে উত্থান হয়েছে তাতে শঙ্কিত তৃণমূল। বিষয়টিকে তারা কীভাবে সামলাবে এখন সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − 9 =