চিনের চোখরাঙানির উপেক্ষা করে কৌশলী চাল ভারতের!

চিনের চোখরাঙানির উপেক্ষা করে কৌশলী চাল ভারতের!

 

নিজস্ব প্রতিনিধি: ভারতীয় ভূ-খণ্ডে কোনও নির্মাণ কাজ হলেই চিন রীতিমতো চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দেয়। বিশেষ করে অরুণাচল প্রদেশ লাগোয়া চিন সীমান্তে যে দীর্ঘ সড়ক পথ নির্মাণ করছে ভারত, তার বিরুদ্ধেও সরব হয়েছিল চিন। প্রশ্ন একটাই, ভারত তার নিজের দেশে কি করবে তা নিয়ে চিনের মাথাব্যথা কেন থাকবে? আসলে পূর্ব লাদাখের পাশাপাশি অরুণাচল সীমান্তেও চিনের লালফৌজের উস্কানি অব্যাহত। তবে চুপ করে বসে নেই ভারতও। এই পরিস্থিতিতে দ্রুততার সঙ্গে অরুণাচল প্রদেশে যেভাবে আরও একটি বিমানবন্দরের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, তা একেবারেই খুশি করবে না   চিনকে। স্বাভাবিকভাবেই যোগাযোগ ব্যবস্থার আরও উন্নতি হল অরুণাচল প্রদেশে। শনিবার অরুণাচল প্রদেশে প্রথম গ্রিনফিল্ড বিমানবন্দর ‘দোন্যি পোলো’র উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রাজধানী ইটানগর থেকে এর দূরত্ব কুড়ি কিলোমিটারের মতো। এর আগে ইটানগরের নিকটতম বিমানবন্দর ছিল অসমের লীলাবাড়ি বিমানবন্দর। তাই এই বিমানবন্দর উদ্বোধন হওয়ায় অরুণাচল প্রদেশে যোগাযোগ ব্যবস্থায় কার্যত দিগন্ত খুলে গেল বলে সকলে মনে করছেন। যাত্রিবাহী বিমানের পাশাপাশি এই রানওয়েতে যুদ্ধবিমানও ওঠানামা করতে পারবে। আর তাতেই ঘুম ছুটেছে চিনের।এই বিমানবন্দরটিতে রয়েছে আটটি চেক-ইন কাউন্টার। একসঙ্গে সর্বোচ্চ ২২০ জন যাত্রী আসা-যাওয়া করতে পারবেন।

বহুদিন ধরেই অরুণাচল সীমান্তে উস্কানি বজায় রেখেছে চিন। ভারত সেদিকে সতর্ক নজর রেখে চলেছে। তাই অরুণাচল লাগোয়া চিন সীমান্তে যাতে সেনাবাহিনী ও যুদ্ধের ট্যাঙ্ক দ্রুত পৌঁছে যেতে পারে, সেজন্য সেখানে তৈরি হচ্ছে সড়ক পথ। এর আগে মণিপুর লাগোয়া মায়ানমার সীমান্ত এলাকা পর্যন্ত রেলপথ পৌঁছে গিয়েছে। এবার অরুণাচলে যোগাযোগ ব্যবস্থার আরও উন্নতি ঘটল। তিন বছর আগে অরুনণাচলের ইটানগরের ফলঙ্গিতে এই বিমানবন্দরের শিলান্যাস করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এবার সেই ‘পোলো’ বিমানবন্দরের উদ্বোধন করলেন তিনি। প্রায় সাতশো একর জমির উপর গ্রিনফিল্ড বিমানবন্দরটি নির্মিত হয়েছে। যাতে খরচ হয়েছে ৬৪০ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে এই রানওয়ে ২৩০০ মিটার লম্বা। প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও বিমান ওঠানামা করতে পারবে। একটা সময় ওই অঞ্চলে গভীর জঙ্গল ছিল। সেগুলি পরিষ্কার করে বিমানবন্দরটি তৈরি করা হয়েছে। কেন্দ্র মনে করছে এই বিমানবন্দর উদ্বোধনের ফলে অরুণাচলে পর্যটন, বাণিজ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থা আগের চেয়ে অনেক বেশি সহজ হয়ে উঠবে।

তবে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা গোটা বিষয়টিকে অন্য চোখে দেখছেন। তাঁরা মনে করছেন কেন্দ্রীয় সরকার বিশেষ লক্ষ্য নিয়েই ভারত-চিন সীমান্তে পরিবহণ ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করতে চাইছে। এর আগে অসমের সঙ্গে অরুণাচলের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত করতে প্রায় নয় কিলোমিটার লম্বা ঢোলা সাদিয়া সেতু তৈরি হয়েছে। এই সেতুর সাহায্যে ভারতীয় সেনার যুদ্ধের ট্যাঙ্ক অনায়াসে অরুণাচলে পৌঁছে যেতে পারে। তাই দ্রুততার সঙ্গে যেভাবে এই বিমানবন্দর তৈরি করা হয়েছে তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × one =