Aajbikel

পুজোয় ব্যাপক সাড়া বামেদের বইয়ের স্টলে, ভোটে শূন্য হলেও জনসংযোগে তরুণ প্রজন্মের ভিড়

 | 
বই

নিজস্ব প্রতিনিধি:  গোটা রাজ্যে দশ হাজার! সংখ্যাটা অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি। দুর্গাপুজো উপলক্ষে এসএফআই, ডিওয়াইএফআই এবং সিপিএম দলের পক্ষ থেকে ওই বিপুল সংখ্যক স্টল দেওয়া হয়েছে।

দুর্গাপুজো শুধু যে একটি ধর্মের নয়, সেটা সকলেই জানেন। দশকের পর দশক ধরে দুর্গাপুজো সামাজিক উৎসবে পরিণত হয়েছে। সর্বধর্ম নির্বিশেষে প্রত্যেক সম্প্রদায়ের মানুষ কোনও না কোনও ভাবে দুর্গাপুজোয় সামিল হয়ে থাকেন। এটাই পশ্চিমবঙ্গের চিরকালীন সংস্কৃতি। যাকে কুর্নিশ জানায় গোটা দেশ। আর সেই কারণেই ইউনেস্কো দুর্গাপুজোকে বিশেষ স্বীকৃতি দিয়েছে। তাই দেখা যায় সিপিএম পুজোয় বিশ্বাস না করলেও উৎসবের মরশুমে মার্কসীয় সাহিত্যের বইয়ের স্টল দিয়ে থাকে। এভাবেই জনসংযোগ চালিয়ে আসছে তারা। তবে শুধু সিপিএম কেন, রাজ্যে প্রধান বিরোধী দলের তকমা পাওয়ার পর থেকেই বিজেপিও পুজোর মাধ্যমে জনসংযোগ বাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে। আর এটা সকলেই জানেন কলকাতা তথা রাজ্যের প্রত্যেকটি পুজোর সঙ্গে তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত রয়েছেন।

একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গিয়েছে সিপিএম তথা বামেরা। এই প্রথম বিধানসভায় বামেদের কোনও প্রতিনিধি নেই। একই ভাবে লোকসভাতেও পশ্চিমবঙ্গ থেকে বামেদের কোনও প্রতিনিধি নেই। কিন্তু মজার ব্যাপার গত বিধানসভা নির্বাচনে শোচনীয় হারের পরেও দুর্গাপুজো উপলক্ষে রাজ্যে ১২০০ বইয়ের স্টল দিয়েছিল সিপিএম। মার্কসবাদ, সমকালীন রাজনীতি নিয়েই সর্বাধিক বেশি সংখ্যক বই গতবার বিক্রি হয়। প্রচুর মানুষ ভিড় করেন সিপিএমের স্টলগুলিতে। সিপিএমের দাবি গত বছর কঠিন পরিস্থিতিতেও এক কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছিল। সবচেয়ে বেশি বই বিক্রি হয়েছিল উত্তর চব্বিশ পরগনায়। এই জেলার স্টলগুলি থেকে দশ লক্ষ টাকার বই বিক্রি করতে পেরেছিল সিপিএম। বিষয়টি নিয়ে সিপিএমের ব্যাখ্যা, বাংলার শিক্ষিত সমাজের মধ্যে এখনও বামপন্থার একটা বিশেষ জায়গা রয়েছে। আর সেই কারণেই সিপিএমের স্টলগুলি থেকে গত বছর বিপুল অঙ্কের বই বিক্রি হয়েছে। এ বছরেও স্টল থেকে বই বিক্রির পাশাপাশি ব্যাপক জনসংযোগ নিয়ে আগে থেকেই আশাবাদী ছিলেন বামেরা। হয়েছেও তাই৷ সিপিএমের বইয়ের স্টলে তৃণমূলের হামলা, প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে চলচিত্র অষ্টমীর রাতে পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশ রঞ্জনসহ আরও কয়েকজনকে আটক করার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বাংলার রাজনীতি৷

উৎসবের আবহে বইয়ের স্টলে বিপুল জনসংযোগ হবে, বিটার চেহারা নেবে সেটা ভাবতেও পারেননি সিপিএম নেতারা। বিমান বস, সূর্যকান্ত মিশ্র, সুজন চক্রবর্তীর পাশাপাশি সিপিএমের শাখা সংগঠনের নেতা নেত্রীরা উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন স্টলে। সিপিএমের আশা করেছিলেন,  এ বছর যা বই বিক্রি হবে তা অতীতের সমস্ত রেকর্ডকে ছাপিয়ে যাবে।  সূত্রের খবর, লক্ষমাত্র কিছুটা হলেও এবার পূরণ হয়েছে৷ উৎসবের পর তৃণমূল বিরোধী আন্দোলনকে আরও উচ্চগ্রামে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে এখন থেকেই সংগঠনকে চাঙ্গা করতে চাইছে সিপিএম। তাই এই বছরের বিপুল সংখ্যক স্টল নিঃসন্দেহে উৎসাহিত করছে দলের যুব ব্রিগেডকে।

Around The Web

Trending News

You May like