নয়াদিল্লি: গুজরাটে সেতু দুর্ঘটনায় যেভাবে এত মানুষের মৃত্যু হয়েছে তাতে প্রবল অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি। কিছুদিন পরেই গুজরাট বিধানসভা নির্বাচন। একাধিক কারণে বিজেপি এমনিতেই গুজরাট নির্বাচন নিয়ে কিছুটা হলেও চিন্তিত রয়েছে। তাই বহুদিন ধরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বারবার গুজরাট সফর করছেন। ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুর নিরিখে গুজরাট নিঃসন্দেহে বিজেপির ‘এপিসেন্টার’ হিসেবেই পরিচিত। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি বলছে সেতু দুর্ঘটনার কারণে নির্বাচনমুখী গুজরাটে যথেষ্ট অসুবিধার মধ্যে পড়েছে গেরুয়া শিবির।
দুর্ঘটনার পর সেতু সংস্কারের দায়িত্ব পেয়েছিল যে সংস্থা সেই ওরেভা গ্রুপের মাঝারি স্তরের কয়েকজন কর্মীকে শুধু গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শীর্ষকর্তারা পলাতক বলে খবর। কেন গুজরাট পুলিশ ওই সংস্থার উচ্চপদস্থ আধিকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি, সেই প্রশ্ন উঠছে। বিষয়টি নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ ওই সংস্থার কর্ণধারের সঙ্গে বিজেপির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে বহু বছর ধরেই। তবে কি সেই কারণেই তাঁর টিকি ছোঁয়া যাচ্ছে না? এই প্রশ্ন অবধারিতভাবে উঠতে শুরু করেছে। সবচেয়ে বড় কথা স্থানীয় মোরবী পুরসভা দুর্ঘটনার দায় পুরোপুরি ওরেভা গ্রুপের উপর চাপিয়ে দিয়েই ক্ষান্ত থেকেছে। কিন্তু তারাও কি দায় স্বীকার করতে পারে? কারণ ওই সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেছিল মোরবী পুরসভাই। অথচ ওই সংস্থার ওয়েবসাইট ঘাঁটলে দেখা যাবে নির্মাণ সংক্রান্ত কোনও বিভাগ তাদের নেই। তারা মূলত ই-বাইক, ঘড়ি ইত্যাদি তৈরি করে থাকে। তাহলে এমন একটি কোম্পানির সঙ্গে পুরসভা কি করে এমন গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিটি করল সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তাই এটা স্পষ্ট গুজরাট প্রশাসন ঘটনার দায় এড়াতে পারে না। আর সেই সূত্রেই রাজ্যের একটা বড় অংশ গুজরাট সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। আর বিজেপির আশঙ্কা এর অভিঘাত দেখা যাবে গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে।
গুজরাট বিধানসভার ম্যাজিক ফিগার ৯২। গত বিধানসভা নির্বাচনে ৯৯ টি আসনে জিতে কান ঘেঁষে জয় পেয়েছিল বিজেপি। সেবার গ্রামাঞ্চলে বিজেপির ফলাফল অত্যন্ত খারাপ হয়েছিল। তাই সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে বিজেপি এবার বহু আগে থেকেই কোমর বেঁধে নেমে পড়ে। ঘনঘন গুজরাট সফর করতে থাকেন প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কিন্তু সমস্ত তাল কেটে দিল সেতু দুর্ঘটনা। যা নির্বাচনে বিরোধীদের ভাল রকম ডিভিডেন্ড দেবে বলেই বিজেপি মনে করছে।