নিজস্ব প্রতিনিধি: গরু, কয়লা-সহ বিভিন্ন দুর্নীতি কাণ্ডে প্রধান অভিযুক্ত বিনয় মিশ্র বহুদিন ধরেই পলাতক। বর্তমানে তিনি প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র ভানুয়াতুতে রয়েছেন। বিজেপির অভিযোগ বিনয় মিশ্রের সঙ্গে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। মূলত বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বহুদিন ধরেই এই অভিযোগ করে চলেছেন। এবার শুভেন্দুকে বিষয়টি নিয়ে পাল্টা আক্রমণ করলেন অভিষেক। অভিষেকের দাবি বিনয় মিশ্রের সঙ্গে ফোনে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে শুভেন্দুর। যে অভিযোগে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। এ বিষয়ে ঠিক কি বলেছেন অভিষেক? শুক্রবার ইডি দফতর থেকে বের হওয়ার পর সাংবাদিকদের সামনে অভিষেক এ বিষয়ে শুভেন্দুকে চ্যালেঞ্জ করে বলেন,” পাচার কাণ্ডে অভিযুক্ত বিনয় মিশ্র দ্বীপরাষ্ট্রে রয়েছেন। সে নাকি ফেরার। আট মাস আগে ফোনে ওর সঙ্গে কথা বলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। বলেছেন কেস আমি দেখে নেব। আদালত চাইলে অডিও ক্লিপ জমা দিতে রাজি। প্রয়োজন হলে অডিও ক্লিপের ফরেনসিক পরীক্ষা হোক। কাচের ঘরে বসে ঢিল মারবেন না। আমি মিথ্যে বললে আমার বিরুদ্ধে শুভেন্দু অধিকারী মানহানির মামলা করুন।”
উল্লেখ্য গ্রেফতার হওয়ার হাত থেকে বাঁচতে প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র ভানুয়াতুতে রয়েছেন বিনয় মিশ্র। ওই রাষ্ট্রের নাগরিক হওয়ায় বিনয় ভারতীয় দূতাবাসে নিজের পাসপোর্ট জমা দিয়েছেন। কয়লা, গরু পাচার কাণ্ডের মূল পান্ডা বিনয় মিশ্র গত বছর পশ্চিমবঙ্গ থেকে মুম্বই হয়ে দুবাই পালিয়ে গিয়েছিলেন বলে শোনা যায়। এরপর বিভিন্ন দেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিনয় গা ঢাকা দেন বলে সিবিআই দাবি করছে। তবে বিনয়ের ভাই বিকাশ মিশ্র বহুদিন আগেই সিবিআইয়ের জালে ধরা পড়েছেন। কিন্তু রেড কর্নার নোটিস জারি করার পরেও বিনয়কে ধরা যায়নি। এই অবস্থায় গুরুতর অভিযোগ করছেন অভিষেক।
তবে কি অভিষেক তথা তৃণমূলের বক্তব্য বিনয়ের সঙ্গে শুভেন্দুর যোগাযোগ থাকার কারণেই এতদিন ধরে গরু, কয়লা পাচার রাজ্যে রমরমিয়ে চলেছে? অর্থাৎ অভিষেক স্পষ্ট বোঝাতে চেয়েছেন এই সমস্ত দুর্নীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত রয়েছেন শুভেন্দু। কিন্তু প্রশ্ন হল যে অডিও রেকর্ডিংয়ের কথা বলছেন অভিষেক, সেটা সামনে এলে পুরো বিষয়টির কি মোড় ঘুরে যাবে? অন্তত তৃণমূল শিবির তেমনটাই মনে করছে। কিন্তু রাজনৈতিক মহলে এই চর্চাও শুরু হয়েছে যে, এতদিন তাহলে কেন অভিষেক এই ফোন রেকর্ডিংয়ের বিষয়টি সামনে আনেননি? তবে কি সাম্প্রতিককালে এই ফোন রেকর্ডিং তাঁর হাতে এসেছে? এই বিষয়গুলি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে। তৃণমূল মনে করছে ফোন রেকর্ডিং যদি আগামী দিনে সামনে আসে এবং তার সত্যতা প্রমাণিত হয় তাহলে সেটি তখন তাদের কাছে ব্রহ্মাস্ত্র হয়ে উঠবে। আপাতত সেই অপেক্ষায় রয়েছে তারা। তাই এই পরিস্থিতিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে গুরুতর অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে, তা আগামী দিনে কোন দিকে মোড় নেয় সেটাই এখন দেখার।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>