নিজস্ব প্রতিনিধি: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির পাশাপাশি কয়লা পাচার, গরু পাচার কাণ্ডে তদন্ত চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই এবং ইডি। তবে তদন্ত প্রক্রিয়া আরও দ্রুত হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করে আদালত। একাধিকবার তদন্তকারীদের উদ্দেশে সে কথা বলতে শোনা গিয়েছে বিচারকদের। যদিও তদন্তকারীদের দাবি তদন্ত ঠিক পথেই এগোচ্ছে। আর যেভাবে তাঁরা নতুন নতুন সূত্র খুঁজে পাচ্ছেন তাতে শীঘ্রই দুর্নীতি কাণ্ড নয়া মোড় নেবে বলে মনে করে ওয়াকিবহাল মহল। এই পরিস্থিতিতে গরু পাচার মামলায় রাজ্যের পাঁচ পুলিশকর্তাকে তলব করতে পারে ইডি, খবর সূত্রের। তবে কি নতুন কোনও সূত্র পেয়েছেন তদন্তকারীরা? এমনটাই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে একজন প্রাক্তন আইপিএস অফিসারও রয়েছেন। তিনি আবারও নেতাও বটে। যদিও এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা কিছু জানায়নি। তবে বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, শীঘ্রই দিল্লিতে তাঁদের ডেকে পাঠানো হবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য।
গরু পাচার মামলায় রাজ্য প্রশাসনের বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্তা জড়িত বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা আধিকারিকরা। আর সেই সূত্রেই ডিসেম্বরের শুরুতেই তাঁদের দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হতে পারে। ইডি সূত্রে খবর, বীরভূম ও মুর্শিদাবাদের গুরুদায়িত্বে ছিলেন এরকম একাধিক প্রাক্তন পুলিশকর্তাদের ডাকা হবে। তাঁদের মধ্যে দুই আইপিএস ও ২ পুলিশ সুপার রয়েছেন বলে খবর। এমনকী তৃণমূলের এক বিধায়ককেও ডেকে পাঠানো হতে পারে বলে একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে। ডিসেম্বরের ৩ থেকে ৭ তারিখের মধ্যে তাঁদের দিল্লিতে তলব করা হতে পারে।
ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে যেহেতু মুর্শিদাবাদ এবং বীরভূম দুটি জেলাই সীমান্তবর্তী, তাই সেখান দিয়েই সবচেয়ে বেশি গরু পাচার হয়েছে। তাই এই দুটি জেলায় বিভিন্ন সময় যে সমস্ত পুলিশ আধিকারিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চান ইডি অফিসাররা। গরু পাচার সম্পর্কে তাঁদের কাছে কোনও খবর থাকত কিনা, খবর থাকলে তাঁরা বিষয়টি নিয়ে কি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন, বিষয়টি তাঁরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন কিনা, এই সমস্ত তথ্য জানতে চাইবে ইডি৷
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ড নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের বেশ কয়েকজন প্রাক্তন আধিকারিক বহুদিন ধরেই এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে জেলে রয়েছেন। এছাড়া গরু পাচার মামলাতেও গ্রেফতার হওয়ার পর দীর্ঘদিন ধরে জেলে রয়েছেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। এর পাশাপাশি কয়েক মাস আগে কয়লা পাচার মামলায় রাজ্য পুলিশের বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্তাকে দিল্লিতে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডি। সবমিলিয়ে এটা স্পষ্ট দুর্নীতির তদন্তে আরও গতি বাড়াতে চায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আর সেই কারণেই এবার রাজ্যের বর্তমান ও প্রাক্তন মিলিয়ে পাঁচ পুলিশ কর্তাকে দিল্লিতে ইডি তলব করতে চলেছে বলে খবর।