Aajbikel

বরাদ্দ নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যকে একযোগে চ্যালেঞ্জ সিপিএমের? এবার কী জবাব দেবে তৃণমূল-বিজেপি?

 | 
বামফ্রন্ট সিপিএম

নিজস্ব প্রতিনিধি: কেন্দ্রের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ফের বঞ্চনার অভিযোগ তুলে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঝাড়গ্রাম সফর সেরে বুধবার ফেরার পথে কেন্দ্রকে ফের তোপ দেগেছেন তিনি। তাঁর দাবি, কেন্দ্র ঘরের টাকা আটকে দিয়েছে। প্রাপ্য টাকা দিচ্ছে না। জিএসটি তুলে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু রাজ্যকে যা টাকা দেওয়ার কথা তা দিচ্ছে না। তার ফল ভুগতে হচ্ছে মানুষকে। উল্লেখ্য মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বেলপাহাড়ি, শিলদা এলাকায় একাধিকবার গাড়ি থামিয়ে আদিবাসী পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা করেন। মুখ্যমন্ত্রীকে সামনে পেয়ে স্থানীয় মানুষজন তাঁদের অভাব, অভিযোগের কথা জানান। পরিস্রুত পানীয় জলের পাশাপাশি মাথা গোঁজার নিরাপদ আশ্রয় তাঁরা কবে পাবেন, সেই প্রশ্ন করেন মুখ্যমন্ত্রীকে। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের বলেছেন কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না বলে অনেক কাজ করা যাচ্ছে না। এভাবেই থমকে যাওয়া যাবতীয় প্রকল্প নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের উপরই সমস্ত দায় ঠেলে দিয়েছেন। কিন্তু গোটা ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়েছে তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে।

ঠিক এই জায়গা থেকে তৃণমূল ও বিজেপিকে একযোগে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে সিপিএম। সিপিএমের বক্তব্য রাজ্য যদি সত্যিই প্রাপ্য আর্থিক বরাদ্দ কেন্দ্রের কাছ থেকে না পায়, তখন সেই বঞ্চনা নিয়ে রাজ্য সরকারের পাশে থাকবে তারা। কিন্তু তৃণমূল সরকারকে প্রমাণ করতে হবে কেন্দ্রের টাকা তারা নয়ছয় করেনি। এ বিষয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে তৃণমূল সরকারকে। সেই সঙ্গে সিপিএমের দাবি, কেন্দ্রকেও শ্বেতপত্র প্রকাশ করে জানাতে হবে তারা কত টাকা দিয়েছে রাজ্য সরকারকে। বিষয়টি নিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বিজেপি ও তৃণমূলকে একযোগে নিশানা  করে বলেছেন, রাজ্য বলছে কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না। আবার কেন্দ্র বলছে টাকা দেওয়া হয়েছে। দু'জনেই মিথ্যা কথা বলে থাকে। তাই আমাদের দাবি কেন্দ্র ও রাজ্য দু'পক্ষই আর্থিক বরাদ্ধ ও পাওনা নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করুক। একই সঙ্গে সেলিম জানিয়েছেন যদি সত্যিই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে তাঁরাও বাংলার মানুষের স্বার্থে তৃণমূল সরকারের পাশে দাঁড়াবেন। কিন্তু রাজ্য সরকার দুর্নীতি করলে তার জন্য সিপিএম আন্দোলন করবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। সেক্ষেত্রে ছেড়ে কথা বলা হবে না তৃণমূলকে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে এভাবেই বিজেপি এবং তৃণমূল দু'পক্ষকেই সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে সাধারণ মানুষের সমর্থন পেতে চাইছে বামেরা। এতে তৃণমূল বা বিজেপি কেউই উড়িয়ে দিতে পারবে না সিপিএমের প্রস্তাব।

বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ আটকে যাচ্ছে কেন্দ্র টাকা না দেওয়ায়, এই অভিযোগ বহুদিন ধরেই করছেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও রাজ্য বিজেপির অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের টাকা নিয়ে নয়ছয় করছেন। সেই টাকায় উন্নয়ন না করে দান খয়রাতিতে খরচ করা হচ্ছে। কিন্তু গোটা বিষয়টি অন্য মাত্রা পেয়েছে সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন থাকায়। তৃণমূল ভাল করেই জানে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই ইস্যু তাদের বিরুদ্ধে যেতে পারে। রাজ্যের বহু প্রান্তে পরিস্রুত পানীয় জলের সমস্যা যে রয়েছে তা নবান্ন ভাল করেই জানে। তাই মুখ্যমন্ত্রী বিলক্ষণ বোঝেন শুধু কেন্দ্রের উপর দায় চাপালেই হবে না। তাই গোটা বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত তৃণমূল। আর মওকা বুঝে এ ব্যাপারে তৃণমূল এবং বিজেপিকে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে বামেরা। সেই পথে দুটি দল হাঁটে কিনা এখন সেটাই দেখার।

Around The Web

Trending News

You May like