‘গ্রুপবাজি’ চলবে না! জেল থেকেই পঞ্চায়েত নিয়ে কর্মীদের কড়া বার্তা অনুব্রতর!

‘গ্রুপবাজি’ চলবে না! জেল থেকেই পঞ্চায়েত নিয়ে কর্মীদের কড়া বার্তা অনুব্রতর!

 

নিজস্ব প্রতিনিধি: ‘ক্যাপ্টেন’ দীর্ঘদিন ধরে জেলে রয়েছেন। কবে জেল থেকে মুক্ত হবেন তা জানা নেই কারও। অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবীরা বহু চেষ্টা করেও আদালত থেকে জামিনের নির্দেশ নিয়ে আসতে পারেননি। তাই গরু পাচার মামলায় আসানসোল সংশোধনাগারেই রয়েছেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সেই সঙ্গে তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলকে ওই একই মামলায় দিল্লিতে হাজিরা দিতে হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়েও যদি দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল জেলে থাকেন তবে দল কতটা ভাল ফল করবে বীরভূমে? গোটা বীরভূম জেলা জুড়ে আপাতত এই চর্চাই চলছে। আর আদালতের এজলাসে বসেই অনুব্রত দলীয় কর্মীদের প্রতি যে কড়া বার্তা দিয়েছেন তাতে গোটা বিষয়টি অন্য মাত্রা পেয়েছে। মাত্র কিছুদিন আগের কথা। সেদিন  অনুব্রতকে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হয়েছিল। সেখানে দেখা করতে এসেছিলেন তাঁর জেলার তৃণমূলের কিছু নেতা-কর্মী। পঞ্চায়েত ভোটে দলের রণকৌশল নিয়ে সেখানেই তাঁদের নির্দেশ দিতে দেখা যায় কেষ্টকে। এমনকী এটাও বলেছেন দলে কোনও রকম গ্রুপবাজি চলবে না। সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, তিনি নিশ্চয়ই সারা জীবন জেলে থাকবেন না। তাই বীরভূমের ফেরার পর তিনি সেই ধরনের কর্মীদের ডানা ছেঁটে দেবেন।

 

রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি মনে করছে অনুব্রতর অনুপস্থিতিতে তৃণমূল বীরভূমে যথেষ্ট সমস্যার মধ্যে পড়বে। তাই এখন থেকেই রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব বীরভূমে গিয়ে চড়া সুরে তৃণমূলকে আক্রমণ করে বক্তব্য রাখছেন। যদিও রাজনৈতিক মহল মনে করছে বিজেপির কাজটা অতটা সহজ হবে না। আসলে বিগত বছরগুলিতে অনুব্রত মণ্ডল যে ‘ভোট মেশিনারি’ প্রয়োগ করে তৃণমূলকে একের পর এক নির্বাচনে বিপুল সাফল্য এনে দিয়েছিলেন, তা কাছ থেকে দেখেছেন তাঁর ঘনিষ্ঠ অনুগামীরা। তাই অনুব্রত জেল থেকে ছাড়া না পেলেও ঠিক সেভাবেই পঞ্চায়েত নির্বাচনে বীরভূমে তৃণমূল ঝাঁপাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি বীরভূমের বিপুল সংখ্যক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ যে কোনও মতেই বিজেপিকে ভোট দেবেন না তা পরিষ্কার। সেই জায়গা থেকে তৃণমূলকে খুব একটা অসুবিধায় পড়তে হবে না। তবে এটা ঠিক অনুব্রত মণ্ডল থাকলে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা যে আত্মবিশ্বাস পান তাতে কিছুটা হলেও খামতি দেখা যাবে। সেই অসুবিধাটা মেনে নিতে হবে জেলার নেতৃত্বকে। সব মিলিয়ে অনুব্রতর থাকা বা না থাকার মধ্যে যে বিস্তর ফারাক দেখা যাবে, তেমনটা মনে করার কারণ নেই। তবে এটা ঠিক যদি সত্যিই পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় অনুব্রত জেল থেকে বের হতে না পারেন, তখন বীরভূম তৃণমূল নেতৃত্বকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। ইতিমধ্যেই জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব একাধিকবার বৈঠক করেছেন বিষয়গুলি নিয়ে। তাই এখন থেকেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঘুঁটি সাজাতে তৈরি হচ্ছেন তাঁরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *