কলকাতা: তিনি সর্বভারতীয় সভাপতি৷ আসছেন বাংলায়৷ তবে, এবার একটু অন্যরকম ভাবে৷ এই প্রথম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনকালে রাজকীয় রোড-শো বিজেপির৷ এই রোড-শো ঘিরে বিপুল উত্তেজনা ছড়িয়ে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের মধ্যে৷ বড়বড় হোর্ডিং, ব্যানার, ফ্লেক্স সেজে উঠছে লেনিন সরণি৷ স্তব্ধ রাজপথ৷ রাস্তাজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে গাঁদা ফুল৷ কালো পিচের রাস্তা এখন গেরুয়া৷
রাজনীতির প্রচারে বিভিন্ন প্রচার সামগ্রীর পাশাপাশি ফুলের ব্যবহার দীর্ঘদিনের। গোলাপ থেকে গাঁদা ফুল- ভোট রাজনীতির বাজারে এই দুই ফুলের চাহিদা একলাফে অনেকটাই বেড়েছে। অত্যধিক গরমে যখন ফুল ছোট হয়ে যাওয়া থেকে পাপড়ি ঝরে যাওয়ার সমস্যায় জর্জরিত চাষিরা, তখন তাঁদের বাড়তি অক্সিজেন জোগাচ্ছে রাজনীতির প্রচারে ফুলের মালা ও পাপড়ি কেনার হিড়িকে৷
আজ, কলকাতায় রোড শোয়ে পা মেলাবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ৷ সেই উপলক্ষে ধর্মতলা থেকে সিমলা স্ট্রিট পর্যন্ত এই ব়্যালি চলাকালীন যাত্রাপথে রাস্তার দু’ধারের বহুতল থেকে গাঁদা ফুলের পাপড়ি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে৷ ফুলের পাপড়ি জোগানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিজেপির হাওড়া গ্রামীণ জেলাকে। আর সেই মতো গত তিনদিন ধরে শতাধিক পুরুষ-মহিলা কর্মী রাতদিন ধরে গাঁদা ফুলের পাপড়ি ছাড়ানোর কাজ করেছেন৷
মঙ্গলবারের ব়্যালিতে হাওড়া গ্রামীণ জেলা থেকে প্রায় ১০ হাজার কেজি গাঁদা ফুলের পাপড়ি ছড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়৷ এত বিপুল পরিমাণে ফুল সংগ্রহ সম্পর্কে চাষিদের মতে, হাওড়া জেলার বাগনানের বাকুড়দহ, বাঁশবেড়িয়া, চাঁদবেড়িয়া, বাগনান, আন্টিলা ছাড়াও পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট, পশ্চিম মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া, হাউর থেকে গাঁদা ফুল সংগ্রহ করার পর ফুলের বোঁটা থেকে পাপড়ি আলাদা করে শুকিয়ে প্রস্তত করা হয়েছে৷ কিন্তু, প্রশ্ন উঠছে অমিতকে তুষ্ট করতে কতটাকার পুষ্পবৃষ্টি করছে বিজেপি৷ বাজার বলছে, গাঁদা ফুলের দাম এখন ৬০টাকার কাছাকাছি৷ হিসাব বলছে, ৬০ টাকা কেজি দরে ১০ হাজার হাজার কেজি ফুলের দাম দাঁড়াচ্ছে ৬ লক্ষ টাকা৷ শহরবাসীর একাংশের প্রশ্ন, রাস্তায় এভাবে ছ’লক্ষ টাকার ফুল না ছড়িয়ে অনাথ শিশুদের সাহায্য করলে কি খুব সমস্যা হত? অথবা এই ছ’লক্ষ টাকা পথশিশুদের মধ্যে বিলি করে মহাত্ন দেখাতে পারত না বিজেপি?