কলকাতায় এলেন ২০ ইডি আধিকারিক, নতুন করে বড় অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইডি!

নিজস্ব প্রতিনিধি: ইডির আতসকাচের নিচে এবার কে বা কারা রয়েছেন? তা নিয়ে জল্পনা অন্য মাত্রা নিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের নতুন পদক্ষেপে। কারণ সদ্য দিল্লি থেকে কলকাতায় এসেছেন ইডির ২০ জন আধিকারিক। হঠাৎ করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার এই পদক্ষেপে স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন দুর্নীতি মামলার তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই এবং ইডি।
মামলার সংখ্যা বাড়তে থাকায় এবং ধৃত প্রভাবশালীদের জেরা-সহ বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি করার জন্য প্রয়োজন পড়ছে প্রচুর কর্মীর। কর্মী সংখ্যা কম থাকায় তদন্তের কাজে অসুবিধা হচ্ছে। সেই সমস্যা মেটাতে দিল্লি থেকে ২০ ইডি আধিকারিকের একটি বিশেষ দল কলকাতায় এসেছে বলে খবর। ইডি সূত্রে খবর, আগামী দিনে কলকাতা তথা রাজ্য জুড়ে তদন্তকারীরা একাধিক বড় অভিযান করবেন। সেই কারণেই গত মঙ্গলবার ইডির ২০ জন আধিকারিক কলকাতায় এসেছেন। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, অনুব্রত মণ্ডলের গরু পাচার মামলাতেও পৃথক তদন্ত করবে ইডি। এছাড়া তৃণমূল বিধায়ক, মন্ত্রী ও নেতাদের সম্পত্তি বৃদ্ধির মামলায় সম্প্রতি ইডিকে পক্ষ করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই মামলার তদন্ত দ্রুত শুরু করতে চায় ইডি। সব মিলিয়ে আরও কর্মীর প্রয়োজন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির। সেই কারণেই কুড়ি জন আধিকারিককে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছে। অর্থাৎ এটা স্পষ্ট তদন্তে আরও গতি বাড়াতেই এমন পদক্ষেপ করেছে ইডি।
এই পরিস্থিতিতে ইডির জালে রাজ্যের কোন কোন প্রভাবশালী নতুন করে ধরা পড়ে তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে ইডি যেভাবে তদন্তে গতি বাড়িয়েছে তাতে বহু জায়গায় কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে যাবে। কিছুদিন আগেই বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ ইডির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন। তিনি স্পষ্ট বলেছেন সিবিআইয়ের তুলনায় ইডি অনেক ভাল কাজ করছে। তারা যেভাবে তদন্ত করছে তাতে দুর্নীতি কাণ্ডে আরও বহু প্রভাবশালী শীঘ্রই ধরা পড়বে। এমনটাই দাবি করেছেন দিলীপ। সেই সঙ্গে সিবিআইকে তীব্র আক্রমণ করেছেন তিনি। দিলীপের অভিযোগ সিবিআইয়ের একাংশের সঙ্গে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের 'সেটিং' হয়ে যাওয়ার কারণে রেজাল্ট পাওয়া যাচ্ছে না।
স্বাভাবিকভাবেই দিলীপের এই বক্তব্য নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে যথেষ্ট কৌতূহল তৈরি হয়। হঠাৎ করে সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে দিলীপ এমন মন্তব্য কেন করলেন তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ঠিক সেই সময় দেখা গেল ইডি তাদের তদন্ত প্রক্রিয়ায় আরও গতি বাড়াতে বিশেষ পদক্ষেপ করল। পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্তারা মনে করছেন, এমন কিছু নিয়ে ইডি এবার তদন্ত করবে যার জন্য বহু সংখ্যক কর্মীর প্রয়োজন। সেই কারণেই পশ্চিমবঙ্গে কর্মীর সংখ্যা বাড়াচ্ছে তারা। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দুর্নীতি কাণ্ডের তদন্তে নেমে ইডি আধিকারিকরা রাজ্য চষে ফেলছেন। সূত্রের খবর, দুর্নীতি কাণ্ডে বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি তাদের হাতে এসে গিয়েছে। এবার সেগুলির সাহায্যে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত প্রমাণ হাতে নিয়ে তাঁদের গ্রেফতার করা হবে। তাই গোটা বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক মহলে যথেষ্ট চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। ইডির জালে এবার কে বা কারা ধরা পড়তে পারেন তা নিয়ে নানা স্তরে আলোচনা চলছে। তাই এই মুহূর্তে কিছুদিন অপেক্ষার পালা। নতুন করে দুর্নীতি কাণ্ডের তদন্তে নেমে ইডি কি বিস্ফোরণ ঘটায় এখন সেটাই দেখার।