ভদোদরা: আমাদের সমাজে আজও ব্রাত্য বৃহন্নলারা৷ বহু মানুষের কাছে তাঁরা এখনও অস্পৃশ্য, অচ্ছুৎ৷ কিন্তু সময়ের বিবর্তনে অস্পৃশ্যতার বেড়া ভেঙে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছেন তাঁরা৷ প্রতিষ্ঠা করছেন নিজেদের৷ এমনই একজন বৃহন্নলা হলেন গুজরাতের ভদোদরার জোয়া খান৷ ভারতের প্রথম বৃহন্নলা হিসাবে গুজরাতের কমন সার্ভিস সেন্টার (সিএসসি)-এ কাজ শুরু করলেন তিনি৷
ভদোদরার এই কমন সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে মূলত টেলিমেডিসিন কনসালটেশন দেওয়া হয়৷ ভারতের ডিজিটাল ইন্ডিয়া প্রকল্পের অধীনে গড়ে তোলা হয়েছে এই কমন সার্ভিস সেন্টার৷ যার মাধ্যমে জন পরিষেবা, সমাজকল্যাণনূলক প্রকল্প, স্বাস্থ্য প্রকল্প, আর্থিক সহায়তা, শিক্ষাক্ষেত্রে সহায়তা এবং কৃষি পরিষেবা দেওয়া হয়ে থাকে৷ এছাড়াও গ্রামীণ এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলিতেও বিভিন্ন রকম পরিষেবা দেওয়া হয়ে থাকে৷ টেলিমেডিসিন সার্ভিসের মাধ্যমে রোগীরা ভিডিও কলিং-এর মাধ্যমে নিকটবর্তী সিএসসিগুলি থেকে পরামর্শ নিতে পারেন৷
জোয়ার কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন খোদ কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রযুক্তিমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ৷ টুইট করে তিনি বলেন, ‘‘গুজরাতের ভদোদরা জেলার জোয়া খান ভারতের প্রথম বৃহন্নলা, যিনি কমন সার্ভিস সেন্টারের অপারেটর হিসাবে কাজ করছেন৷ টেলিমেডিসিন কনসালটেশনের কাজ শুরু করেছেন তিনি৷’’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘বৃহন্নলা সম্প্রদায়কে ডিজিটালি সাক্ষর করে তোলাই তাঁর প্রধান লক্ষ্য৷ যাতে আগামী দিনে তাঁরা আরও বেশি সুযোগ পেতে পারেন৷’’
জোয়া ভদোদরারই বাসিন্দা৷ এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘আমার প্রশিক্ষণ চলছে৷ তবে গরিব মানুষদের পাশে দাঁড়াতে আমি সরকারের সমস্ত প্রকল্প এবং পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাই৷ আমার সম্প্রদায়ের মানুষদের সাহায্য করতে চাই৷’’ সিএসসি ভদোদরার জেলা পরিচালক আসিফ খান পাঠান জানান, তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের অন্তর্গত সিএসসির অধীনে প্রায় ৩.৫ লক্ষ গ্রামীণ উদ্যোক্তা রয়েছেন৷ উদ্যোক্তারা শিক্ষা স্বাস্থ্য সহ প্রায় ৩০০ রকমের তথ্য সরবরাহ করে থাকে৷ তিনি আরও বলেন, ‘‘সময় ধীরে ধীরে বদলাচ্ছে৷ এই পরিবর্তনের জোয়ারেই সিএসসি-তে একজন বৃহন্নলাকে নিয়োগ করার বিষয়টি মাথায় আসে৷ জোয়ায় তাঁদের সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রথম ব্যক্তি, যিনি ব্যাংকিং এবং শিক্ষাক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত হবেন৷’’