নয়াদিল্লি: করোনা মোকাবিলায় লকডাউনে বদলেছে মানুষের জীবন৷ একাধিক সমস্যার সম্মুখীন মানব সমাজ৷ কিন্তু এত সবের মাঝেও প্রাপ্তি একটাই৷ লকডাউনের কমেছে বাতাসের বিষকণা৷ প্রাণোচ্ছ্বল হয়েছে প্রকৃতি৷ কমেছে বিশ্বের সর্বাধিক দূষিত শহর দিল্লির দূষণ৷ পরিষ্কার শুদ্ধ বাতাসে শ্বাস নিচ্ছে রাজধানীর মানুষ৷
করোনা পরিস্থিতিতে জারি লকডাউনে বন্ধ যান চলাচল থেকে শুরু করে যাবতীয় নির্মাণকাজ৷ আর কোভিড-১৯ সংক্রমণ রুখতে লকডাউনের সিদ্ধান্তে ফের মোহময়ী রূপে সেজে উঠেছে প্রকৃতি৷ শিল্প, কৃষি এবং গাড়ির ধোঁয়ায় দূষণের পুরু আস্তরণে ঢাকা পড়েছিল দিল্লি৷ শহরকে গ্রাস করেছিল ধোঁয়াশা৷ সুইস সংস্থা আইকিউ এয়ার ভিসুয়ালের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৯ পর্যন্ত পর পর দুই বছর বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর ছিল দিল্লি৷ কিন্তু মার্চের ২২ তারিখ থেকে শুরু হওয়া লকডাউনের ২৫ দিনের মধ্যেই পরিবর্তন ঘটতে শুরু করে রাজধানীর বাতাসে৷
শুধু দিল্লি নয়, লকডাউনের জেরে ভারতের ৯০টি শহরে ব্যাপক হারে দূষণের মাত্রা কমেছে। দিল্লি কিংবা মুম্বইয়ের মতো জায়গায় দূষণ কমার পরিসংখ্যান থেকে অবাক হয়ে গিয়েছেন পরিবেশবিদরাও। ঝকঝকে নীল এখন দিল্লির আকাশ৷ বেড়েছে দৃশ্যমানতা৷ দিল্লির স্যাটেলাইট শহর নয়ডার বাসিন্দা রাকেশ সিং পেশায় একজন কমপিউটার ইঞ্জিনিয়র৷ তিনি বলেন, ‘‘বিশুদ্ধ বাতাস আমাদের কাছে আশীর্বাদ স্বরূপ৷ শুদ্ধ বাতাসে শ্বাস নিলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ে৷ যা করোনাভাইরাস মোকাবিলার ক্ষমতাকেও বাড়িয়ে তুলবে৷’’
যানবাহনের ধোঁয়া আর নির্মাণকাজের ধুলোবালি দিল্লির দূষণকে অতিমাত্রায় বাড়িয়ে তুলেছিল৷ এই শহরের বুক চিড়ে ছুটে চলে প্রায় ১ কোটি গাড়ি৷ যা মুম্বই, চেন্নাই এবং কলকাতার থেকেও বহুগুণ বেশি৷ লকডাউনের ফলে থমকে গিয়েছে আন্তর্জাতিক অর্থনীতির গতি। ভয়ঙ্করভাবে কমে গিয়েছে তেলের দাম৷ কমেছে বিদ্যুতের চাহিদা৷ তবে যাই হোক বিশ্ব দিবসের আগে প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস তো নেবে দিল্লিবাসী৷
তবে লকডাউন উঠতেই ফের বায়ুতে মিশবে বিষ৷ কমবে শুদ্ধতা৷ প্রকৃতিতেও বিপুল পরিবর্তন আসবে বলে আগাম সতর্ক করে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা৷