নয়াদিল্লি: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে যাবার পর work-from-home ব্যাপারটা একেবারে স্বাভাবিক হয়ে গেছে। লকডাউন কার্যকরী হবার পর প্রত্যেক সংস্থা এই পদ্ধতিতে কর্মচারীদের কাজ চালিয়ে যেতে নির্দেশ দিয়েছিল। এখন আনলক পর্ব চালু হলেও বহু ক্ষেত্রেই work-from-home হিসেবেই কাজ হচ্ছে। কারণ অবশ্যই সংক্রমণের বৃদ্ধি। এখন হলফ করে বলা যায়, আগামী বেশ কয়েক মাস এই পদ্ধতিতে কাজ হবে। প্রথম প্রথম বাড়ি থেকে কাজ করতে কর্মচারীদের বেশ ভালই লাগছিল, অনেকেই মনে করেছিল কাজ করতে অনেক বেশি সুবিধা এবং বিলাসিতার সময় পাওয়া যাবে। কিন্তু বাস্তবে ঘটছে উল্টো ঘটনা। এখন সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, সময়ের অনেক বেশি কাজ করতে হচ্ছে কর্মচারীদের! একই রকম ভাবে ছুটি কেড়ে নিচ্ছে work-from-home।
সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় প্রকাশিত হয়েছে, বাড়ি থেকে কাজ করতে করতে দিন প্রতি ‘অফিস টাইম’ একটু একটু করে বাড়ছে বিশ্ববাসীর। অর্থাৎ নির্ধারিত সময়ের চেয়ে কয়েক মিনিট বেশি প্রত্যেকদিন কাজ করতে হচ্ছে কর্মচারীদের। এইভাবে সারা সপ্তাহের সময়ের যোগফল মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে কর্মচারীরা নিজের অজান্তেই হয়তো একদিন এক্সট্রা কাজ করে ফেলেছেন! অর্থাৎ সপ্তাহে একদিন ছুটি শুধু খাতায়-কলমে হয়ে যাচ্ছে। সমীক্ষায় প্রকাশিত হয়েছে, একমাত্র দক্ষিণ কোরিয়ায় দিন প্রতি কাজের সময় বেড়েছে সবচেয়ে কম, ,৭ মিনিট। কিন্তু আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, ভারতে দৈনিক কাজের সময় বেড়ে গেছে ৩২ মিনিট! অর্থাৎ ঠিকভাবে হিসাব করলে, মাসে প্রায় ১৪ ঘন্টা কাজ বেড়ে গেছে কর্মচারীদের। প্রথম প্রথম যারা বাড়ি থেকে কাজকে মাথায় তুলে রাখছিলেন, এখন তারাই সবচেয়ে বেশি হয়তো হতাশায় ভুগছেন, ভুগছেনও।
গ্লোবাল প্রযুক্তি সংস্থা এনটিটি দাবি করেছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মনে করা হচ্ছে কর্মচারীরা বাড়ি থেকে কাজ করতে পারছেন না। বরং অফিস অ্যাটমোস্ফিয়ার না থাকলে তাদের কাজে সমস্যা হচ্ছে, কাজের দক্ষতা ঘাটতি পড়ছে। তবে এর পাল্টা যুক্তি রয়েছে। বাড়ি থেকে কাজ করার জন্য ওভারহেড খরচ কমে যাচ্ছে, সেই কারণে অনেকেই মনে করছেন মাসের শেষে হাজারী হিসেবে যা পাওয়া যাচ্ছে সেটা অনেক বেশি কাজে লাগানো যাচ্ছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেই অনেক সংস্থা ‘কোথা থেকে কাজ করবেন’ সেই সিদ্ধান্ত সংস্থার কর্মীদের ওপর ছেড়ে দিয়েছে। ভবিষ্যতেও বাড়ি থেকে কাজ করার দিকেই বেশি প্রাধান্য দেওয়া হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে এখন থেকে।