হায়দরাবাদ: বিয়ের টোপ দিয়ে একাধিক পুরুষের সঙ্গে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে মা ও ছেলেকে গ্রেফতার করল হায়দরাবাদ পুলিশ৷ বিভিন্ন সময় নানা মিথ্যের আশ্রয়ে টাকা হাতানোই ছিল তাঁদের কাজ৷
বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক আমেরিকাবাসী ভারতীয়ের কাছ থেকে ৬৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় মালবিকা দেভতি নামের এক মহিলাকে৷ গ্রেফতার হওয়ার এক সপ্তাহের ভিতরেই উঠে আসে আরও একটি প্রতারণার অভিযোগ৷ দ্বিতীয় অভিযোগটি আনেন হায়দরাবাদেরই এক তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী৷ তিনি জানান, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েই এক কোটি টাকা নিয়ে চম্পট দেন এই মহিলা।
বছর ৩৩-এর ওই তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীর অভিযোগ, হোয়াটঅ্যাপ এবং টেলিগ্রামে তাঁর সঙ্গে ‘লাভ চ্যাট’ করতেন মালবিকা৷ কিন্তু মালবিকার পাতা ফাদে পা দিয়ে ১ কোটি টাকা দিয়ে বসেন তিনি৷ এর জন্য শুধু নিজের সেভিংস অ্যাকাউন্টই ফাঁকা করেননি, অন্যের কাছ থেকে ধার নিয়েও টাকা পাঠান মালবিকাকে৷
আমেরিকাবাসী এনআরআই ইঞ্জিনিয়রের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে গত ২৭ মে মালবিকা এবং তাঁর ২২ বছরের ছেলে প্রণব ললিত গোপাল দেভতিকে গ্রেফতার করে জুবিলি হিল থানার পুলিশ৷ জানা গিয়েছে, নাম ভাঁড়িয়ে ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটে ওই অনাবাসী ভারতীয় ইঞ্চিনিয়রের সঙ্গে আলাপ জমান মালবিকা৷ সেখানে নিজেকে কীর্তি নামে পরিচয় দেন তিনি৷ জানান, তিনি পেশায় একজন ডাক্তার৷
অভিযোগ, মালবিকা তাঁকে বলেছিলেন, তিনি প্রচুর সম্পত্তির মালিক। কিন্তু তাঁর মা সেই সম্পত্তি নিজের নামে লিখিয়ে নিতে চান৷ তাঁর বাবা মারা গিয়েছেন। তাই আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রচুর টাকা দরকার তাঁর। এই অজুহাতেই ওই অনাবাসী ভারতীয়র থেকে ৬৫ লক্ষ টাকা নেন মালবিকা। এর পরেই বেপাত্তা হয়ে যান তিনি। প্রতারণার শিকার হয়েছেন বুঝতে পেরেই মালবিকার নামে অভিযোগ দায়ের করেন ওই এনআরআই৷
অন্যদিকে, হায়দরাবাদের ওই তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীর থেকে টাকা বাগাতে অন্য ছক কষেছিলেন মালবিকা৷ একটি তেলেগু ম্যাট্রিমনি সাইটে অনু পল্লবী মাগান্তি নামে ফেক প্রোফাইল খুলে তাঁর সঙ্গে চ্যাট করা শুরু করেন তিনি। হায়দরাবাদের ওই যুবককে মালবিকা জানান, তিনি আমেরিকাবাসী ডাক্তার৷ কিন্তু তাঁর পরিবার রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত প্রভাবশালী৷ পরিবারের লোকজন তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দিয়েছে৷ এখন আইনি লড়াই লড়তে টাকার প্রয়োজন রয়েছে তাঁর৷ এর জন্য মালবিকাকে ১.২ কোটি টাকা দেন ওই তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী৷ এই গোটা ঘটনায় মালবিকার সাগরেদ ছিল তাঁর ছেলে৷ এই ঘটনায় মহিলার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০ সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।