শ্বশুরকে পিঠে চড়িয়ে হাসপাতালে গেলেন বউমা

শ্বশুরকে পিঠে চড়িয়ে হাসপাতালে গেলেন বউমা

ভাটিগাঁও (অসম): স্বামীর অনুপস্থিতিতে অসুস্থ শ্বশুরকে হাসাপাতালে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বই নিলেন না, তাঁর চিকিৎসা সঠিক সময়ে শুরু করতে পিঠে করে তাঁকে নিয়ে চললেন৷ ঘটনাটি ঘটেছে অসমে৷ শ্বশুরকে পিঠে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে৷ এই ছবি দেখে অনেকেই তাঁর প্রশংসা করেছেন৷

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া মহিলাকে চিহ্নিত করা গিয়েছে৷ তাঁর নাম নীহারিকা৷ তাঁর শ্বশুরের নাম থুলেশ্বর দাস৷ বয়স ৭৫ বছর৷ নীহারিকার স্বামী সূরজ কর্মসূত্রে বাড়ির বাইরে থাকেন৷ ছেলের অনুপস্থিতিতে বউমা নীহারিকা শ্বশুরের দেখভাল এবং যত্নআত্তি করে থাকেন৷ তাঁরা ভাটিগাঁও এলাকার রাহার বাসিন্দা৷ শ্বশুর থুলেশ্বর দাস করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বুঝতে পেরে অতিরিক্ত ভাবনাচিন্তা না করে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করার সিদ্দান্ত নেন নীহারিকা৷ নীহারিকার করোনা পরীক্ষার রিপোর্টও পজিটিভ আসে৷

নীহারিকা শ্বশুরকে নিয়ে হাসপাতালে পৌছনোর পর স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁকে জেলার কোভিড কেন্দ্রে যাওয়ার কথা বলেন এবং নীহারিকাকে হোম আইসোলেশনে থাকার পরামর্শ দেন৷ বাড়ি থেকে হাসপাতাল দূরে হলেও, করোনা আক্রান্ত শ্বশুরকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার সময় কারও সাহায্য না পেয়ে নিজের কাঁধেই যে শুধু দায়িত্ব তুলে নেন তাই নয়, শ্বশুরকে পিঠে চড়িয়ে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছেন বউমা৷ চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো হাসপাতালে শ্বশুরকে একা রাখতে নারাজ ছিলেন নীহারিকা৷ এরপর তাঁর জেদের কাছে চিকিৎসকেরাও হার মানেন৷ চিকিৎসকরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করেন এবং তাঁদের দু’জনকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে নগাঁও ভোগেশ্বরী ফুকনানি সিভিল হাসপাতালের করোনা বিভাগে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা করেন৷

উল্লেখ্য, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ইতিমধ্যেই বহু মানুষের প্রাণ কেড়েছে৷ অনেক পরিবার ধ্বংস হয়েছে করোনার ছোবলে৷ বহু মানুষ তাঁর ভালোবাসার মানুষটিকে হারিয়েছেন হাসপাতালের বেড, অক্সিজেন অথবা ওষুধের অভাবে৷ করোনা আবহে সর্বত্র আতঙ্কের ছায়া৷ এমতবস্থায় শ্বশুরকে পিঠে বউমার হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার ঘটনা সত্যিই মন ছুঁয়ে যায়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *