কোয়েম্বাটুর: মাত্র সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করতে পেরেছিলেন লক্ষ্মী সুন্দরাম। নিজে যেটা পাননি তা নিজের মেয়ে নির্মলাকে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। সেই থেকে শুরু হয়েছিল লড়াই তার সঙ্গে ছিল জেদ। অবশেষে যুদ্ধ জয় করেছেন লক্ষ্মী। নিজের মেয়ে নির্মলাকে বানাতে পেরেছেন আইপিএস অফিসার। এ কাহিনী সাহসের, স্বপ্ন পূরণের।
একদিকে কৃষক অন্যদিকে সিঙ্গেল মাদার ছিলেন লক্ষ্মী। শুধু নিজের মেয়ে নির্মলা ছাড়া তার জীবনে আর কেউ ছিল না। তাই নিজের মেয়েকে বড় করে তোলার জন্য সব রকমের চেষ্টা করেছেন তিনি। ২০১৬ সালের মারা গেছেন নির্মলার মা, আজ তার মায়ের স্বপ্ন পূরণের কথা বলতে গিয়ে ভারাক্রান্ত হয়ে যাচ্ছেন নির্মলা। তিনি জানান, তাঁর মায়ের স্বপ্ন ছিল একদিন মেয়ে আইপিএস অফিসার হবে। সেই স্বপ্ন দেখতে দেখতেই তাকে বড় করে তুলেছিলেন তিনি। মাত্র ১৭ বছর বয়সে এক কৃষক পরিবারে বিয়ে হয় লক্ষ্মীর, তার ঠিক তিন বছর পর মারা যান তার স্বামী অর্থাৎ নির্মলার বাবা। কঠিন সময়ে পরিবারের কেউ সাহায্য করেননি লক্ষ্মীকে। একা হাতেই বাবা এবং মায়ের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি।
নির্মলা জানাচ্ছেন, তাঁর মা প্রথম থেকেই সমাজের পুঁথিগত অভ্যেস অমান্য করেছেন। মেয়ে হয়ে গাড়ি চালানো থেকে শুরু করে, নিজের সন্তানদের পড়াশোনা করানোর মতো ‘সাহস’ দেখিয়েছেন তিনি। নিজের সন্তানদের প্রাইভেট ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়েছেন, যত কষ্টই হোক তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছেলে খেলা করতে দেননি কাউকে। নির্মলার দাদা তার পরিবারের ব্যবসা সামলাচ্ছে, এদিকে সে বিএসসি আইটি থেকে স্নাতক হয়েছে। পরবর্তী ক্ষেত্রে ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসলেও প্রথম তিনবার তা পাস করতে পারেনি নির্মলা। তবে ভেঙে পড়েনি সে। মায়ের লড়াই এবং জেদের কথা মনে করেই নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। অবশেষে চতুর্থবার পরীক্ষায় পাশ করে তার মায়ের আইপিএস হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করেছে নির্মলা। বর্তমানে, আইপিএস নির্মলা দেবী, সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন বা সিবিআইয়ে সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ হিসেবে যোগ দিয়েছেন।