শ্রীনগর: ফের উত্তপ্ত কাশ্মীর৷ ছড়িয়ে আতঙ্ক৷ জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা৷ কিছু এলাকায় কারফিউ জারি হয়েছে৷ বন্ধ ইন্টারনেট৷ স্তব্ধ টেলি যোগাযোগ৷ নিয়ন্ত্রণরেখায় বাড়ানো হয়েছে সেনা৷ পাক সেনার হামলার যোগ্য জবাবও দিতে শুরু করেছে ভারতীয় সেনা৷ ইতিমধ্যেই ভারতীয় সেনার গুলিতে মৃত্যু হয়েছে অন্তত চার পাক জওয়ানের৷ খতম আরও তিন জঙ্গি৷ এই নিয়ে ভারত-পাক উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে গৃহবন্দি কাশ্মীরের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা ও মেহবুবা মুফতি৷ মধ্যরাতে গ্রেপ্তার কংগ্রেস নেতা উসমান মজিদ ও সিপিএমের এমএলএ নেতা এম ওয়াই তারিগামি৷ কিন্তু, কাশ্মীর নিয়ে কেন এত সমস্যা?
ইতিহাস বলছে, ১৯৪৭ সাল পরবর্তীকালীন ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও বিতর্কিত অধ্যায় কাশ্মীর৷ কাশ্মীর সমস্যা ভারতের অভ্যন্তরীণ সমস্যা সীমান্ত পেরিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানেরও স্বার্থও এখানে জড়িত৷ রয়েছে উস্কানি৷ ভারত ও পাকিস্তানের শাসকেরা সঙ্কীর্ণ জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করার তাগিদে কাশ্মীরকে তাদের দাবার ঘুঁটি হিসাবে ব্যবহার করে চলেছে বলে অভিযোগ নতুন নয়৷ দুই দেশের শাসকরাই কাশ্মীরের মানুষের ইচ্ছা ও আকাঙ্খার প্রতি বিন্দুমাত্র সম্মান প্রদর্শন না করে দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে উপত্যকার সমস্যাকে জটিল করে তুলেছেন বলেও মনে করেন বহু ইতিহাসবিদ৷
১৯৯০ সাল থেকে চালু হওয়া আফস্পা আজও কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ বলেও মনে করেন অনেকেই৷ উপত্যকায় দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ এই সংকটের মীমাংসা করতে অক্ষম, তা বারংবার প্রমাণিত হয়েছে৷ পরিসংখ্যান বলছে, বিগত তিন দশকে কাশ্মীর এক বধ্যভূমি উপত্যকায় পরিণত হয়েছে৷ ১৯৯০ এর দশকে অসংখ্য কাশ্মীরি ‘বলপূর্বক অন্তর্ধানে’র শিকার বলেও মনে করেন অনেকে৷ ১৯৩৫-এর ভারত শাসন আইন আর ১৯৪৭-এর ভারতের স্বাধীনতার আইনের কাঠামোর মধ্যে রাজ্যযশাসিত অঞ্চলগুলির শাসকরা নিজের ইচ্ছেমতো পাকিস্তান বা ভারতে যোগ দিতে পারেন৷ প্রজাদের অভিমত নেওয়ার কোনও প্রয়োজন বা সুযোগ সে আইনে নেই বলেও মনে করেন অনেকে৷ ফলে ‘ইনস্ট্রুমেন্ট অব অ্যাকশেসনে’ জনগণের মত নেওয়ার কোনও আইনি ভিত্তি নেই বলে মত পর্যবেক্ষক মহলের একাংশের৷