গুয়াহাটি: আজ থেকে ২০ বছর আগে, এমন সময়েই তিব্বতের একটি বাঁধ ভাঙা জলে বানভাসী হয়েছিল অসম, অরুণাচল প্রদেশ৷ এই ঘটনার পরই চিনের সঙ্গে আলোচনায় বসে ভারত৷ ২০০২ সালে দুই দেশের মধ্যে মৌ চুক্তি সাক্ষরিত হয়৷ একইসঙ্গে দেশের নিজস্ব একটি বন্যা পূর্বাভাস মডেলের প্রয়োজন রয়েছে বলেও চিন্তাভাবনা শুরু করে ভারত৷ কিন্তু এর পর আরও সাত বছর কেটে যায়৷ অবশেষে ২০০৯ সালে গঠিত হয় নর্থ ইস্টার্ন কাউন্সিল অ্যান্ড দা নর্থ ইস্টার্ন স্পেস অ্যাপলিকেশন সিস্টেম৷
আরও পড়ুন- প্রযুক্তি হাতিয়ে নকল পণ্যের আঁতুর ঘর চিন, ক্ষতিগ্রস্ত ভারত ও বিশ্ব অর্থনীতি
১১ বছর হয়ে গিয়েছে অসমে কার্যকর রয়েছে এই সিস্টেম৷ কিন্তু আজও ফি বছর ব্রহ্মপুত্রের জলে বানভাসী হয় মানুষ৷ বিপন্ন হয় জীবন ও জীবিকা, নষ্ট হয় সম্পদ৷ মহাকাশ বিভাগের অধীনে থাকা এনইএসএসি থেকে বন্যার প্রাথমিক পূর্বাভাস দেওয়া হয়ে থাকে৷
এনইএসএসি-র দুটি শাখা রয়েছে, আবহাওয়া ও জলবিদ্যুৎ৷ আবহাওয়া শাখার বিজ্ঞানীরা উপগ্রহ চিত্র দেখার পর মাটির তথ্য এবং আইএমডি ডেটা একত্রিত করেন৷ এর পর এটি জলবিদ্যুৎ শাখায় পাঠানো হয়৷ অসম স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম বিশেষজ্ঞ বীরেন বৈশ্য বলেন, ‘‘যখন তারা হাই ডিসচার্জ লক্ষ্য করেন, তখন তাঁরা হাইড্রোলজিক্যাল মডেলটি ব্যবহার করেন৷ এর থেকে সামান্য, মাঝারি নাকি উচ্চ সতর্কতা জারি করা হবে তা বুঝতে সুবিধা হয়৷ এর পর ইমার্জেন্সি কনট্রোল রুমে সেই বার্তা পাঠিয়ে দেওয়া হয়৷
আরও পড়ুন- কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে চর্ম সংস্থাগুলি, কাজ হারিয়ে বেকার ৭৫ হাজার শ্রমিক
খাতায় কলমে এটি শুনতে ভালো হলেও, প্রতি বছর রাজ্যের ৪০ শতাংশ অংশে বন্যার ঝুঁকি থেকেই যায়৷ তবে আগাম সতর্কতার জন্য জীবনহানীর অশঙ্কা অনেকটা কমে৷ বৈশ্য বলেন, ‘‘এই সিস্টেমের প্রর্তনের পরেও কিন্তু বন্যায় মৃত্যুর হার বাড়ছে৷ এর অন্যতম কারণ হল অসচেতনতা৷ আমাদের গ্রামস্তরে পৌঁছে মানুষের মধ্যে এই সচেতনতা তৈরি করতে হবে৷ এই বিষয়ে আরও বেশি সংবেদনশীল হতে হবে৷ এছাড়াও অনেক আগে থেকে মানুষকে সতর্ক করতে হবে৷ রাজ্যে রেন মনিটরিং স্টেশনের সংখ্যাও বাড়াতে হবে৷’’ এই সমস্যাগুলি সমাধান হলেই সম্ভব হবে অসমের বন্যা প্রতিরোধ৷