prime ministerial candidate
নয়াদিল্লি: মুম্বইতে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের তৃতীয় বৈঠকের আগে কিছুটা হলেও ছন্দপতন দেখা গেল। সাংবাদিক সম্মেলনে আম আদমি পার্টির মুখপাত্র প্রিয়াঙ্কা কক্কর স্পষ্ট জানিয়েছেন বিরোধী জোটের পক্ষ থেকে অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থী করা হোক। যেহেতু প্রিয়াঙ্কা আম আদমি পার্টির প্রধান মুখপাত্র, তাই বিষয়টি নিঃসন্দেহে অন্য মাত্রা পেয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে আসরে নেমেছে বিজেপি। বিজেপির দাবি বিরোধী জোটে এবার ফাটল ধরতে শুরু করেছে। ঘটনাটি অন্যদিকে মোড় নিচ্ছে এটা বুঝতে পেরেই আম আদমি পার্টির গুরুত্বপূর্ণ নেত্রী তথা দিল্লি সরকারের অন্যতম মন্ত্রী অতিশী জানিয়েছেন, “অরবিন্দ কেজরিওয়াল প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদার নন। আম আদমি পার্টি কাউকে প্রধানমন্ত্রী করার জন্য ‘ইন্ডিয়া’ জোটে যোগ দেয়নি। আমাদের লক্ষ্য দেশ রক্ষা এবং সংবিধান রক্ষা৷” কিন্তু ঘটনা হচ্ছে এভাবে দুটি মতামত সামনে এনে আসলে কি কেজরিওয়ালকেই প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে আম আদমি পার্টি? এই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠতে শুরু করেছে।
আম আদমি পার্টির মন্ত্রী দ্রুত ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা করলেও বিতর্ক থামানো যাচ্ছে না। কারণ বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া’ জোটের আহ্বায়ক হওয়ার ব্যাপারে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। অধিকাংশ দল এই পদে চাইছেন তাঁকে, এমনটাই খবর। তবে আম আদমি পার্টি এখনও পর্যন্ত তাতে সহমত প্রকাশ করেনি। বিরোধিতা না করলেও খাড়্গের সমর্থনেও কিন্তু কথা বলেনি। যেটা নিয়ে জোটের মধ্যেই ফিসফাস কিন্তু শুরু হয়ে গিয়েছে।
ঘটনা হল বিরোধী জোটে থাকা নেতা-নেত্রীরা বার বার জানিয়েছেন বিজেপিকে দিল্লি থেকে যদি সরানো যায় তখন প্রধানমন্ত্রী কে হবেন সেটা ঠিক করা যাবে। এত আগে থেকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে কাউকে তুলে ধরা হবে না। কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি এই ইস্যুতে তাই মুখ বন্ধ রেখেছে। কিন্তু সেই তাল কেটে দিলেন আম আদমি পার্টির অন্যতম মুখপাত্র। রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, এটা কী ইচ্ছা করে করা হল?
একজন সুকৌশলে কেজরিওয়ালের নাম ভাসিয়ে দেবেন, আবার অন্য একজন সেটি ঠিক নয় বলে জানাবেন, এটা কি পরিকল্পনা মাফিক করেছে আম আদমি পার্টি? রাজনীতির কারবারিদের একাংশ সেই সম্ভাবনাকে কিন্তু উড়িয়ে দিতে পারছেন না। যথারীতি গোটা বিষয়টি নিয়ে উল্লসিত গেরুয়া শিবির। এরপরই মুম্বইতে পৌঁছে বিষয়টি নিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী জোটে ফাটলের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, “কেউ এমন প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদার হওয়ার কথা তোলেনি। আমাদের কেউ কিছু বলেনি। বিরোধী জোটের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী কে হবেন, সেটা গৌণ বিষয়৷” তাই আপাত দৃষ্টিতে বিষয়টি এখনকার মতো মিটে গেলেও ভবিষ্যতে সেটি আবার নতুন করে কেউ তুলবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন কিন্তু থেকেই গেল।