রাইসিনা বলতে গেলে মর্মুর দখলেই, এক নজরে তাঁর রাজনৈতিক জীবন

রাইসিনা বলতে গেলে মর্মুর দখলেই, এক নজরে তাঁর রাজনৈতিক জীবন

নয়াদিল্লি: চলছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোট গণনার প্রক্রিয়া। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে দেশের পরবর্তী সাংবিধানিক সর্বাধিনায়ক হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন রাজ্যপাল আদিবাসী সম্প্রদায়ভূক্ত দ্রৌপদী মুর্মু। তিনি যদি এই নির্বাচনে জয়লাভ করেন তাহলে দেশ পাবে ভারতের দ্বিতীয় মহিলা এবং প্রথম আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত রাষ্ট্রপতি। আপাতত এই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে সামনে রেখে কার্যত উত্তেজনায় ফুটছে গোটা দেশ। অন্যদিকে মুর্মুর বিজয় উদযাপন করতে প্রস্তুত শাসক শিবির থেকে শুরু করে ওড়িশায় তাঁর গ্রামের বাসিন্দারা, সকলেই। বৃহস্পতিবার দুপুরে জানা গিয়েছে ভোট গণনার প্রথম পর্বেই প্রতিদ্বন্দ্বী যশবন্ত সিনহাকে বেশ কিছুটা পিছনে ফেলে দিয়েছেন মুর্মু। দ্বিতীয় দফাতেও পেয়েছেন রেকর্ড ভোট। এখন তৃতীয় দফার ভোট গণনার ফলাফল কি হয় সেটাই দেখার। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মত, এই লড়াইয়ে মুর্মুর জয় এক প্রকার নিশ্চিত। আসুন জেনে নেওয়া যাক দ্রৌপদীর জীবনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কিছু ইতিহাস।

ওড়িশার প্রত্যন্ত এক আদিবাসী গ্রামে জন্ম দ্রৌপদীর। ১৯৫৮ সালের ২০ জুন ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার বাইদাপোশি গ্রামে এক সাঁওতাল পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন দ্রৌপদী। ছোট থেকেই মেধাবী ছাত্রী হিসেবে পরিচিত দ্রৌপদী। নিজের কর্মজীবন শুরু করেছিলেন একজন শিক্ষিকা হিসাবে। তবে তাঁর রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সূত্রপাত বাংলার প্রতিবেশী রাজ্য ওড়িশা থেকে। ওড়িশার বিধায়ক হয়ে তিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন। এরপর ২০০০ সালে ওড়িশায় ভারতীয় জনতা পার্টি এবং বিজু জনতা দলের জোট সরকারের সময় দ্রৌপদী হয়েছিলেন বাণিজ্য এবং পরিবহন দপ্তরের মন্ত্রী। ২০০০ সাল থেকে ২০০২ সালে ৬ই আগস্ট পর্যন্ত তিনি ওই পদের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। ২০০৪ সালে তিনি মৎস্য এবং প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দপ্তরের দায়িত্ব পান। ওই বছরই তিনি আবার রায়বানপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হন।  এরপর তিনি ২০১৫ সালে ঝাড়খণ্ডের নবম রাজ্যপাল হিসাবে নিযুক্ত হন। তিনি ছিলেন ঝাড়খণ্ডের প্রথম মহিলা রাজ্যপাল। এছাড়াও তিনি ছিলেন ওই রাজ্যের প্রথম সাঁওতাল সম্প্রদায়ভুক্ত রাজ্যপাল। ২০১৫ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তিনি ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপালের পদে অসিন ছিলেন।

বলে রাখা ভালো আজ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তিনি যদি জয়লাভ করেন তাহলে তিনি দেশের দ্বিতীয় মহিলা এবং প্রথম আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত রাষ্ট্রপতি হবেন। এছাড়াও এই প্রথম ওড়িশার কোন নাগরিক রাষ্ট্রপতির পদ দখল করবেন। যা প্রতিবেশ রাজ্য ওড়িশা তো বটেই, সমস্ত দেশের কাছে অত্যন্ত গর্বের বিষয়। জানা যাচ্ছে, মুর্মুর জয়ে সামিল হতে দেশের প্রায় ২ লক্ষ আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত গ্রাম বিজয় মিছিলের প্রস্তুতি নিয়েছে। পাশাপাশি মুর্মুর নিজের গ্রামের বাসিন্দারা ২০ হাজার মিষ্টি তৈরি করেছে বলেও খবর। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − six =