মঙ্গলবার ভোরে পাকিস্তানে ঢুকে জইশ-ই-মহম্মদের ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়ে এসেছে ভারতীয় বায়ুসেনার ১২টি মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমান৷ কিন্তু, জানেন কী, জইশ-ই-মহম্মদের ঘাঁটি চেনাতে মিরাজকে সহযোগিতা করেছিল কোনও বিমান? জানা গিয়েছে, মিরাজের পথ পরিস্কার করতে প্রথমে রওয়ানা হয় ‘নেত্র’ নামের ভারতীয় যুদ্ধ বিমান৷ ‘নেত্র’, অর্থাৎ ‘চোখ’। যার মূল কাজ হল নজরদারি চালানো৷
কী ক্ষমতা রয়েছে এই নেত্র বিমানের? জানা গিয়েছে, কোনও মিসাইল যদি ধেয়ে আসে, তবে তা ইনফ্রারেড রশ্মির সাহায্যে অনেক আগে থেকেই বুঝে যেতে পারে এই বিমান। ওই ইনফ্রারেড রশ্মি মিসাইলের চারপাশে থাকা আগুন সহজেই সনাক্ত করে ফেলতে সক্ষম। একেবারে ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি ও হার্ডওয়্যার দিয়ে প্রস্তুত এই নেত্র-র মূল কাজই হল ভারতীয় বায়ু সেনাকে কোনও বিপদের আগাম সংকেত দেওয়া। এছাড়া, কোথাও আক্রমণ করার আগে সংশ্লিষ্ট এলাকাটির ‘চরিত্র’টিও ভালো করে মেপে নিতে পারে এই বিমান৷ ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও)-এর দ্বারা তৈরি হয়েছিল এই বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিমানটির নকশা।
ডিআরডিও সূত্রে জানানো হয়, শত্রুপক্ষের ঘাঁটি থেকে ৪৫০ কিলোমিটার দূর থেকে গোটা এলাকার ছবি তুলে আনতে পারে এই বিমান৷ সনাক্ত করতে পারে রাডার সিগন্যালকে। যার ফলে শত্রুপক্ষের সেনাশিবিরে গোটা ছবি তুলে আনে ‘নেত্র’৷ ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে এই মুহূর্তে দুটি নেত্র বিমান রয়েছে। তৃতীয়টি এখনও সম্পূর্ণ তৈরি হয়নি। ২০০৭ সালে নেত্র বিমান তৈরির কাজ শুরু হয়। তখন খরচ পড়েছিল ২ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা। ১০ বছর সময় লাগে পুরোটা প্রস্তুত হতে। ২০১৭ সালে তা ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে আসে।
একবারে টানা পাঁচঘণ্টা উড়তে পারে নেত্র বিমান। এছাড়া, এয়ার-টু-এয়ার রিফুয়েলিং-এর ফলে টানা ন’ঘণ্টা আকাশে ভাসতে পারে এটি। এছাড়া, স্যাটেলাইটের সাহায্য নিয়েও নিজের কাজটি করতে সক্ষম এই অত্যাধুনিক বিমানটি।