Aajbikel

নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে ঐতিহাসিক রায়, কেন প্যানেল তৈরি করল সুপ্রিম কোর্ট? কী ছিল আগের নিয়ম?

 | 
নির্বাচন কমিশন

নয়াদিল্লি: নির্বাচন কমিশন গঠনে ঐতিহাসিক রায়৷ সুপ্রিম নির্দেশে বদলে গেল মুখ্য নির্বাচন কমিশনার(CEC) নিয়োগের নিয়ম। এবার থেকে আর  স্বাধীনভাবে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করতে পারবে না কেন্দ্রীয় সরকার। পাশাপাশি সুপ্রিম রায়ে বদলে গিয়েছে আরও দুই নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগের নিয়ম৷ এবার থেকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সহ অন্যান্য কমিশনার নিয়োগের জন্য সুপারিশ করবে একটি প্যানেল। ওই প্যানেলে থাকবেন দেশের প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা ও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। 

আরও পড়ুন- ত্রিপুরায় NOTA-র চেয়েও নীচে তৃণমূল! 'তোলামুল পার্টি' বলে কটাক্ষ শুভেন্দুর

এতদিন ধরে যে নিয়মে নির্বাচন কমিশনের উচ্চ পদগুলিতে নিয়োগ হত, তা স্বচ্ছ ছিল না বলেই বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ উঠেছে। নিয়ম সংস্কারের আর্জিও জানিয়েছেন কেউ কেউ। তবে দীর্ঘদিন ধরে নিয়মে বদল আসেনি। নির্বাচন কমিশনের উচ্চপদে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয় সু্প্রিম কোর্টে। সেই মামলায় রায় দিতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতি যথাক্রমে কে এম জোসেফ, অজয়রাস্তোগী, অনিরুদ্ধ বোস, হৃষিকেশ রায় এবং সিটি রবিকুমারের সমন্বয়ে গঠিত সাংবিধানিক বেঞ্চ তাঁদের পর্যবেক্ষণে জানায়, মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সহ অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি নিয়ে গঠিত প্যানেলের অনুমোদন জরুরি। সাংবিধানিক বেঞ্চের আরও পর্যবেক্ষণ, ‘নির্বাচন অবশ্যই স্বচ্ছ হওয়া উচিত। নির্বাচন কমিশনকে স্বচ্ছতা বজায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে৷ গণতন্ত্রে স্বচ্ছ নির্বাচন, নাহলে তার ফল ধ্বংসাত্মক হতে পারে।’


নির্বাচন কমিশনের উচ্চ পদগুলিতে নির্বাচনের পুরনো নিয়ম কী ছিল?


মুখ্য নির্বাচন কমিশনার পদে কাকে নিয়োগ করা হবে, এতদিন সেই সিদ্ধান্ত নিত কেন্দ্রীয় সরকার। নাম নির্ধারণ হয়ে যাওয়ার পর, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নিয়োগ করতেন রাষ্ট্রপতি। এর জন্য আলাদা ভাবে কোনও প্যানেল বা কমিটি ছিল না। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের পদের মেয়াদ ছিল ৬ বছর বা বয়স ৬৫ হওয়া পর্যন্ত৷ নির্বাচন কমিশনের এই পদাধিকারীরা সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সমতুল্য বেতন ও সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতেন।


কীভাবে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে পদ থেকে অপসারণ করা যায়?


মুখ্য নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগের বিশেষ ঝক্কি না থাকলেও, অপসারণের পদ্ধতি কিন্তু বেশ জটিল। শৃঙ্খলাভঙ্গ বা কোনও অনৈতিক কাজের অভিযোগে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে পদ থেকে সরানো যায়৷ এক্ষেত্রে লোকসভা ও রাজ্যসভার দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যকে উপস্থিত থেকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে ভোট দিতে হবে। এর পরেই তাঁকে সরানো সম্ভব।

দেশের প্রাক্তন উপ-প্রধানমন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদবানিও একসময় এই নিয়োগ পদ্ধতি সংস্কারের দাবি জানিয়েছিলেন। ২০১২ সালে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও ক্যাগের অডিটরের নিয়োগ পদ্ধতি বদলানোর দাবি জানিয়েছিলেন এই প্রবীণ নেতা৷ তিনি চেয়েছিলেন, এই পদগুলিতে নিয়োগ হোক একটি কমিটির সুপারিশে৷ যেই কমিটিতে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী, লোকসভা ও রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা, দেশের আইনমন্ত্রী ও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি।


 

Around The Web

Trending News

You May like