NPR কী? কেন এই পরিকল্পনা? সমস্যা এড়াতে পড়ুন বিস্তারিত!

এবিষয়ে কোনো সংশোধন বা সংযুক্তিকরণ করার থাকলে সরকার নিযুক্ত প্রতিনিধিরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে নাগরিকদের সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করেন এবং সেইসব তথ্য অনুসারে জাতীয় জনসংখ্যাপঞ্জী তৈরী হয়৷ সেক্ষেত্রে ২০২১- এর জাতীয় জনসংখ্যাপঞ্জী তৈরীর আগে ২০২০ সালেই  এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে চাইছে কেন্দ্র৷ তবে এবার একইসঙ্গে জনগণনার কাজটিও সেরে ফেলতে চাইছে কেন্দ্র৷

নয়াদিল্লি: নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় যখন তোলপাড় গোটা ভারতবর্ষ৷ তখন নাগরিকত্ব বিষয়ে অস্বচ্ছতা রেখেই দেশের নাগরিকদের পরিবারভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ এবং একইসঙ্গে জনগণনার কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায়৷ যদিও এই বিষয়টিকে ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্টার (এনপিআর) আপডেশন বা জাতীয় জনসংখ্যাপঞ্জী পুনর্নবীকরণ বলেই উল্লেখ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বিবৃতিতে৷ কারণ এনপিআর-এর অর্থ দেশের নাগরিকদের একটি সুষ্ঠু তালিকা তৈরি করা৷ তার আগে এবিষয়ে কোনো সংশোধন বা সংযুক্তিকরণ করার থাকলে সরকার নিযুক্ত প্রতিনিধিরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে নাগরিকদের সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করেন এবং সেইসব তথ্য অনুসারে জাতীয় জনসংখ্যাপঞ্জী তৈরী হয়৷ সেক্ষেত্রে ২০২১- এর জাতীয় জনসংখ্যাপঞ্জী তৈরীর আগে ২০২০ সালেই  এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে চাইছে কেন্দ্র৷ তবে এবার একইসঙ্গে জনগণনার কাজটিও সেরে ফেলতে চাইছে কেন্দ্র৷

জনগণনা কমিশন জানিয়েছে, দেশের প্রত্যেকটি স্বাভাবিক বাসিন্দার পরিচিতি সম্পর্কে তথ্য রাখতেই জাতীয় জনসংখ্যাপঞ্জী তৈরি করা হয়৷ তাই ভারতের বসবাসকারী প্রত্যেক বাসিন্দার জাতীয় জনসংখ্যাপঞ্জীতে নাম তোলা বাধ্যতামূলক৷
এক্ষেত্রে সরকারি প্রতিনিধিরা প্রত্যেক বাসিন্দাকে নিজেদের তথ্য জানাতে হবে, যেমন, নিজের নাম,দেশ,জন্মস্থান, বাবা-মায়ের নাম,বাড়ির কর্তার সঙ্গে সম্পর্ক, স্বামী বা স্ত্রীর নাম (বিবাহিত হলে), বর্তমান ঠিকানা, বর্তমান ঠিকানায় বসবাসের মেয়াদ, স্থায়ী ঠিকানা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা৷ কাজ শুরু হবে ২০২০-র ১ এপ্রিল, চলবে ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০ পর্যন্ত৷ দেশের স্বীকৃত সাধারণ নাগরিকদের তালিকা তৈরির জন্য জাতীয় জনসংখ্যাপঞ্জীর এই কাজ গ্রাম, শহর, উপজেলা, জেলা বা সামগ্রিক ভাবে দেশের প্রত্যেকটি রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত৷

এনপিআর-এ এখানকার সমস্ত বাসিন্দাদের একটি তালিকা রয়েছে, যারা কমপক্ষে ৬ মাস ধরে কোনও এলাকায় বাস করেছেন এবং আগামী ৬ মাস বা তারও বেশি সময় সেই অঞ্চলে থাকার পরিকল্পনা করছেন৷ যদিও রেজিস্ট্রার জেনারেল এবং সেন্সাস কমিশনারের ওয়েবসাইট অনুসারে দেশের মধ্যে শুধুমাত্র অসমকেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে৷  বাকি সব রাজ্যেই এনপিআর বাধ্যতামূলক বলেই জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷ জাতীয় জনসংখ্যাপঞ্জী (এনপিআর)-র জন্য ৩৯৪১ কোটি এবং জনগণনার জন্য ৮৭৫০ কোটি টাকা মিলিয়ে মোট প্রায় ১৩০০০ কোটি বরাদ্দ করা হয়েছে৷

১০ বছর অন্তর দেশে জনগণনা হয়৷ তার আগে সরকারের প্রতিনিধিরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে নাগরিকদের পরিচয় সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেন৷ তবে তার জন্য কোনও পরিচয়পত্র বা নথির প্রয়োজন হয় না, শুধুমাত্র মৌখিক তথ্যের উপর ভিত্তি করেই তৈরি হয় এনপিআর৷ ২০১১ সালে জনগণনার আগে ২০১০ সালে প্রথম এনপিআর-তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল৷ তার পর ২০১৫ সালে সেই তথ্য ডিজিটাইজেশনের কাজও সম্পূর্ণ হয়েছে বলে জানিয়েছে জনগণনা কমিশন৷ এবার ২০২১ সালের জনগণনার আগের বছরেই ২০২০-তেই এনপিআর তথ্য আপডেট করার  কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা৷

পুরো বিষয়টি জানার পর এনপিআর এবং এন আর সি  নিয়ে বিভ্রান্তি হতেই পারে৷ কিন্তু দুটি প্রক্রিয়া আলাদা৷ তবে দুটি ক্ষেত্রেই সাধারণ বিষয় একটাই যে প্রত্যেক বাসিন্দার আবশ্যিকভাবে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে প্রমাণ থাকতে হবে৷ এনপিআর মৌখিক হলেও সরকারি প্রতিনিধিরা পারিবারিক খোঁজখবর  নিতে এসে কোনোভাবে সন্দেহ প্রকাশ করলে সেবিষয়ে কিকি পদক্ষেপ হতে পারে সেটা শেষপর্যন্ত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের আওতায় পড়তে বাধ্য৷ তাই হয়তো পশ্চিমবঙ্গ সহ কেরল, পাঞ্জাব এন আর সি এবং সিএএ ইস্যু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এনটিআর স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ এক্ষেত্রে মঙ্গলবারই অভয় দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ৷ তিনি তিনি বিষয়টি বোঝাতে না পারলেও এন আর সি-র মত করেই অভয় দিয়েছেন যে এর ফলে কোন নাগরিককে কোন রকম অসুবিধে সম্মুখীন হতে হবে না৷ এমনকি এনআরসির মত এন পি আর নিয়েও বিরোধীরা দেশের মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে বলেও দুঃখ প্রকাশ করেছেন তিনি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 × 5 =