আজ বিকেল: কাজই নেই তো রোজগার কোথা থেকে হবে। খাবই বা কি মাঠের পর মাঠ খালি পড়ে আছে, কোথাও কোনও চাষাবাদের ব্যবস্থা নেই। তাই রোজগার বন্ধ খাওয়াও বন্ধ। এখন যদি স্থানীয় বাসিন্দাদের সবাই জানোয়ারের জীবন যাপন করতে পারে তাহলেই লাভ হবে। কেড়ে খাবে, খাবারের জন্য একে অপরের সঙ্গে যুদ্ধ করবে পরস্পর পরস্পরকে মেরে মাংস খাবে, তাহলেই পেটের জ্বালা জুড়োবে। পাঁচ বছরের মোদি সরকার দেশবাসীর ঘরে এতটাই লক্ষ্মীর ঝাঁপি উপুড় করে দিয়েছে যে ষষ্ঠদফা নির্বাচনের আগে এভাবেই ডিজিটাল ইন্ডিয়ার প্রতি তিরস্কার উগড়ে দিল বছর ১৪-র কিশোরী। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশের এক গ্রামের।
যখন গালভরা বুলি আউড়ে প্রতি মাসে মন কী বাত খুলে বসেন চৌকিদার নরেন্দ্র মোদি, তখন তো প্রতিশ্রুতির বন্যা ছোটে। আর সামলোচকদের মুখ বন্ধ করতে উন্নয়নের ফিরিস্তি। যখন কোনওভাবেই ব্যর্থতাকে চাপা দিতে পারেন না তখন টেনে আনেন ধর্মকে। বিভেদের রাজনীতি করে বাংলার মানুষকে কিনতে বার বার ছুটে আসছেন নরেন্দ্র মোদি। বাংলায় নাকি উন্নয়ন নেই, বাংলার মানুষ মমতা সরকারের মুসলিম তোষণে শেষ হয়ে যাচ্ছে। তাহলে যোগীর রাজ্যের কৃষক পরিবার কেন না খেয়ে দিন কাটায়? কৃষকবন্ধুর উন্নতিতে তো ফি বছর আর্থিক বাজেটে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ ঘোষণা করে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। তাহলে সেসব যায় কোথায়। নাকি নীরব মোদি, বিজয় মাল্য আর অম্বানিদের পেট ভরাতে গিয়ে এমন বেহাল অবস্থা হয়েছে সরকারের যে ছিটেফোটাও পড়ে নেই যা দিয়ে দেশের মূল ধারক কৃষক পরিবারকে অন্ন জোগাবে।
এখানেই শেষ নয়, দেশের দরিদ্র মহিলাদের জন্য বিনামূল্যে জ্বালানির গ্যাসের ব্যবস্থা করেছেন, এটা যে কত বড় ফাঁকা বুলি তা প্রমাণ করে দিল কিশোরী নয়না রাওয়াত। সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধি যখন অন্দরমহলে প্রবেশ করেছেন তখন নিজে থেকেই ফাঁকা সিলিন্ডারটি তুলে নিয়ে ক্যামেরার সামনে চলে আসে সে। জানায় ফ্রি নয় মোটেই, কড়কড়ে ৯০০ টাকা দিলেই গ্যাস আসে ঘরে। এখন তো মাঠে কোনও সবজি, ধান গম কিছু নেই, তাই অন্ন সংস্থান নেই রোজগারও নেই। কেননা খেতে সবজি হলেই তার খানিকটা বিক্রি করে দুপয়সা ঘরে আসত। সেসব পথ বন্ধ হওয়ায় আর গ্যাস ভর্তি সিলিন্ডার ঘরে আসে না।
উপায় না দেখে ফের ক্ষমতায় আসতে চৌকিদার সেজেছেন মোদি। এমনই তাঁর নজর যে দেশের মানুষের সম্পত্তি বাঁচানো দূরে যাক, মোদির নজরদারির মধ্যেই না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে লক্ষ লক্ষ কৃষক পরিবার। সেসব বাড়ির মহিলারা সরকারের বিনামূল্যের গ্যাস সিলিন্ডার চোখেও দেখতে পান না। যখন যোগীর রাজ্যে ভোটের প্রচারে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে তখন সেই উত্তরপ্রদেশেই রোজগার হারিয়ে পথে বসেছে কৃষক পরিবারগুলি। এরপরেও যদি ইভিএমের নোটা বাটন না জাগে তাহলে বন্ধ্যত্ব দশায় ধরবে গোটা ভারতবর্ষকে। ভবিষ্যত যেমন ক্ষমা করবে না, ইতিহাসও মনে রাখবে না।