কলকাতা: আমাদের দেশে আইনত মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮৷ কিন্তু আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বহু নাবালিকাকেই পাঠানো হয় ছাদনাতলায়৷ সবচেয়ে উদ্বেগ জনক বিষয় হল, ১৮ পেরনোর আগেই যে রাজ্যে সবচেয়ে বেশি মেয়েদের বিয়ে হয়, সেটা হল পশ্চিমবঙ্গ৷ জাতীয় পরিবার এবং স্বাস্থ্য সমীক্ষায় উঠে এসেছে এই উদ্বেগের ছবি৷
আরও পড়ুন- টিকিট না পেয়ে ‘বিদ্রোহী’ শোভনদেবপুত্র! স্বামীর ওয়ার্ডেই লড়াবেন রত্না!
সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০ থেকে ২৪ বছরের যে সকল মহিলারা ১৮ টপকানোর আগেই বিয়ের পিড়িতে বসেছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে দেশের গড় ২৩.৩ শতাংশ। অথচ পশ্চিমবঙ্গে এই হার ৪১.৬ শতাংশ। ২০ থেকে ২৪ বছরের যে সকল মহিলা ১৮ বছরের আগেই বিয়ে করেছেন, তাঁদের উপর জাতীয় পরিবার এবং স্বাস্থ্য সমীক্ষার পঞ্চম পর্যায়ে দেখা গিয়েছে আগের চেয়ে মেয়েদের বাল্য বিবাহের প্রবণতা অনকেটাই কমেছে। ২০০৫-০৬ সালে আমাদের দেশে মেয়েদের বাল্য বিবাহের হার ছিল ৪৭.৪ শতাংশ৷ ২০১৫-১৬ সালে জাতীয় পরিবার এবং স্বাস্থ্য সমীক্ষা অনুযায়ী বাল্য বিবাহের হার ছিল ২৬.৮ শতাংশ৷ কিন্তু বর্তমানে দেশে মেয়েদের বাল্য বিবাহের হার কমে দাঁড়িয়েছে ২৩.৩ শতাংশে। অর্থাৎ প্রতি পাঁচজন মেয়ের মধ্যে একজনের বিয়ে হচ্ছে ১৮ বছরের আগে। অগের তুলনায় দেশে মেয়েদের বাল্য বিবাহের হার কমলেও পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে ছবিটা যথেষ্ট উদ্বেগজনক।
সমীক্ষা অনুযায়ী ২০-২৪ বছরের যে মহিলারা ১৮ পূর্ণ হওয়ার আগেই বিয়ে সেরেছেন, তাঁদের নিরিখে শীর্ষ স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ৷ এ রাজ্যে বাল্য বিবাহের হার ৪১.৬ শতাংশ৷ এর পরে পর্যায়ক্রমে রয়েছে বিহার (৪০.৮ শতাংশ), ত্রিপুরা (৪০.১ শতাশ), ঝাড়খণ্ড (৩২.২ শতাংশ), অসম (৩১.৮ শতাংশ), অন্ধ্রপ্রদেশ (২৯.৩ শতাংশ), রাজস্থান (২৫.৪ শতাংশ), তেলাঙ্গানা (২৩.৫ শতাংশ), মধ্যপ্রদেশ (২৩.১ শতাংশ), মহারাষ্ট্র (২১.৯ শতাংশ), গুজরাত (২১.৮ শতাংশ), কর্নাটক (২১.৩ শতাংশ) এবং ওড়িশা (২০.৫ শতাংশ)।
আগে সবচেয়ে বেশি বাল্য বিবাহ হত রাজস্থানে৷ মেয়েদের বাল্য বিবাহের নিরিখে সবথেকে উন্নতি হয়েছে সেই রাজ্যেরই৷ উন্নতি হয়েছে মধ্যপ্রদেশ এবং হরিয়ানারও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন,যত বেশি বাল্য বিবাহ হবে, মৃত্যু হারও তত বাড়বে৷ মায়েদের পু্ষ্টির অভাব হবে৷ সেই সঙ্গে আরও একটি জিনিস প্রকট হয়ে উঠবে, তা হল দারিদ্র৷