নয়াদিল্লি: পাকিস্তান হোক বা চীন, সীমান্তে গোলযোগের বিষয়ে বরাবরই রক্ষণশীল ভূমিকায় থেকে এসেছে ভারত। যাবতীয় আগ্রাসনের জবাব দিয়েছে ধৈর্য্য ধরেই। কিন্তু ভারতের এই রক্ষণশীল ভঙ্গি যে তার দুর্বলতা নয়, আগ্রাসনের পন্থা যে চাইলে ভারতও অবলম্বন করতে পারে, এদিন সেই ইঙ্গিতই দিলেন ভারতীয় বায়ুসেনা (IAF) প্রধান আরকেএস ভাদাউরিয়া।
উত্তরে লাদাখ সীমান্তে চীনা আগ্রাসনকে কেন্দ্র করে গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকেই দেশ জুড়ে ছড়িয়েছে উত্তেজনা। সম্প্রতি উত্তর পূর্বেও চীনা আগ্রাসনের ইঙ্গিত মিলেছে। তবে ভারত ও চীনের মধ্যেকার লাইন অফ কন্ট্রোলে (LAC) একা চীন নয়, ভারতও আগ্রাসী ভূমিকা নিতে পারে, এদিন তেমনটাই জানিয়েছেন আইএএফ প্রধান ভাদাউরিয়া। শনিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে বসে তিনি বলেন, “যদি ওরা (চীন) আগ্রাসন দেখায়, আমরাও আগ্রাসী হতে পারি। আমরা সম্পূর্ণ তৈরি।”
উত্তর পূর্বে অরুণাচল প্রদেশের বেশ কিছু এলাকায় চীনা গ্রাম তৈরির খবর সামনে এলে তা নিয়ে সম্প্রতি উদ্বেগ ছড়িয়েছে নানা মহলে। এ বিষয়ে বায়ুসেনা প্রধানকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “দ্বিপাক্ষিক ক্ষমতার অনুশীলন শুধুমাত্র সম্পর্কের উন্নতির জন্যেই। কোনো বিশেষ দেশের বিরুদ্ধে তা নয়।” বর্তমানে সমস্ত আধুনিক প্রযুক্তি ও সেনসরকে পঞ্চম প্রজন্মের বিমানে একত্রিত করাই বায়ুসেনার মূল লক্ষ্য, জানান তিনি।
জানা গেছে, এখনও পর্যন্ত ভারতীয় বায়ুসেনা ৩৬টির মধ্যে থেকে ৮টি রাফায়েল ফোর্সের অন্তর্ভুক্ত করেছে। এগুলির প্রত্যেকটিই পারমাণবিক অস্ত্র নিক্ষেপে সক্ষম। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে ফ্রান্সের সঙ্গে এ বিষয়ে ভারতের ৫৯০০০ কোটি টাকার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এদিন বায়ুসেনা প্রধান জানান, চলতি মাসের শেষেই ফ্রান্স থেকে আরো ৩টি রাফায়েল বিমান ভারতে আসবে। “পরের বছরের মধ্যেই সবকটি রাফায়েল বিমান ভারতীয় ফোর্সের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে”,বলেন তিনি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভারত তার পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান গড়ে তুলেছে ডিফেন্স রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশনের (DRDO) সঙ্গে মিলিত ভাবে। ভারতীয় বায়ুসেনার শক্তিতে ভবিষ্যতে ষষ্ঠ প্রজন্মের প্রযুক্তি সংযোজন করবে ভারত, এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে সে ইঙ্গিতও দেন ভাদাউরিয়া। সব মিলিয়ে চীনের বিরুদ্ধে আগ্রাসনে যে ভারত একেবারে তৈরি, তাঁর কথা থেকে এদিন সেই বার্তাই স্পষ্ট হয়েছে।