আজ বিকেল: রাখে হরি তো মারে কে। ১৮ বয়সেই টানা জ্বরে মৃত্যুহল ছেলের। বুতে শোক চেপেই বাড়ির লোক সৎকারের ব্যবস্থা করছে। এমন সময় মা কাঁদতে কাঁদতে দেখলেন, তাঁর ‘মৃত’ ছেলের চোখ দিয়েও বেরিয়ে আসছে জল। সঙ্গে সঙ্গে তিনি অন্য আত্মীয়দের ডেকে দেখালেন। বাড়ির সকলে বিষয়টি দেখতে না দেখতেই পাড়ার ডাক্তারের কাছে খবর গেল। তিনি এসে জানালেন ওই কিশোরের হৃদস্পন্দন রয়েছে। তড়িঘড়ি তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হেল তিন দিনের মধ্যে জ্ঞান ফিরে আসে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে তেলেঙ্গানার সূর্যপেট জেলার পিল্লালামাররি গ্রামে।
অলৌকিক ভাবে বেঁচে ওঠা ওই কিশোরের নাম গন্ধম কিরণ। গত মাসের শেষে তার খুব জ্বর হয়েছিল। সেই সঙ্গে বমি। ওষুধে সেই জ্বর না ছাড়ায় গত ২৬ জুন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে দেন পরিবারের সদস্যরা। পরীক্ষার পর ডাক্তাররা বলেন, গন্ধম হেপাটাইটিসে আক্রান্ত। ২৮ জুন তার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হলে হায়দরাবাদের এক নামী হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই কোমায় চলে যায় গন্ধম কিরণ। এরপরতিন তারিখে ডাক্তাররা জানিয়ে দেন আর কোনও আশা নেই। ব্রেন ডেথ হয়েছে ওই কিশোরের। বাঁচে ওঠার সম্ভাবনা নেই তাই লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম সরিয়ে নিন। এমনকী ছেলেক বাড়ি নিযে যাওয়ার কথাও বলা হয় মা সাইদাম্মাকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কথা শুনে সাইদাম্মা আর দেরি করেননি। ছেলে যখন বাঁচবেই না, তখন শেষ নিঃশ্বাসও বাড়িতেই ত্যাগ করুক। সেজন্য ছেলেকে নিয়ে গ্রামে ফিরে যায় গোটা কিরণের পরিবার। ছেলের মৃত্যু সমাগত খবর পেয়ে আত্মীয় পরিজনে বাড়ি ভরে উঠল। শেষকৃত্যের আয়োজন চলচে এমন সময় সাইদাম্মা দেখেন কিরণের চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়েছে জল। উপস্থিত সকলকে বিষয়টি দেখাতে চমক ভাঙে।
স্থানীয় ডাক্তার যখন দেখেন ছেলের পালস বিট রয়েছে, তখন লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম সঙ্গে রাখার জন্য প্রশংসা করলেন। তড়িঘড়ি তাকে সূর্যপেট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে হায়দরাবাদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সহায়তায় চলল চিকিৎসা। তিনদিন পরে জ্ঞান ফিরল কিরণের। কথা বলল ওই কিশোর, গত রবিবারই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে সে বাড়ি ফিরেছে।