সোনিপত: কৃষক ও পুলিশের খণ্ডযুদ্ধে কার্যত রণক্ষেত্র হরিয়ানা। বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ হরিয়ানার সোনিপতে শীতের তীব্রতার মধ্যে পুলিশ পঞ্জাব কৃষকদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান চালাতে শুরু করে। এই কৃষকরা কৃষি বিল বিরোধী বিক্ষোভে শামিল হন। দিল্লির দিকে যাত্রা শুরু করেন তাঁরা। এই দল সন্ধ্যায় ব্যারিকেড পেরিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশের সঙ্গে কথা বলে। কিন্তু তাতে কাজের বদলে বচসা ও পরে খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়।
এদিন সন্ধ্যায় থেকে প্রায় ২০০ লোকের একটি দল স্লোগান রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিচ্ছিল। ব্যারিকেডের পিছনে একটি পুলিশ অপেক্ষা করছিল। তাদের সঙ্গে ছিল জল কামান এবং বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় অস্ত্র। রাত ন’টার দিকে, অন্ধকারের মধ্যে বোঝাই যায় যে কৃষকরা রাতের জন্য বিক্ষোভ বন্ধ করার কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না। তবে তাঁদের এগিয়ে যাওয়াও সহজ ছিল না। পুলিশ কেবল রাস্তায় বাধা দিচ্ছিল। ব্যারিকেডটি এমনভাবে উঁচু করা হয়েছিল যাতে অন্য দিক থেকে যে কেউ ব্যারিকেডে পৌঁছাতে অসুবিধায় পড়ে।
কৃষকদের এই ছোট্ট দলটি পঞ্জাবের। তাঁরা হলেন হাজার হাজার মানুষের প্রতিনিধি যাঁরা বৃহস্পতিবার সকালে হরিয়ানার বিজেপি সরকারের সিল করা সীমানা লঙ্ঘন করেন ও পুলিশের কঠোর প্রতিরোধের মুখেও তাঁদের যাত্রা অব্যাহত রাখেন।
কৃষকদের মতে, কেন্দ্রের তিনটি কৃষি আইন বাতিল করা তাঁদের ক্ষেত্রে আরও বড় চ্যালেঞ্জের। কারণ তাঁদের মতে এটি তাঁদের জীবিকার পক্ষে হুমকিস্বরূপ। প্রায় তিন মাস ধরে, পঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকরা আইনগুলির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে যাচ্ছেন। কেন্দ্র বলেছে যে কৃষকরা এই আইনে লাভবান হবেন এবং দেশের যে কোনও জায়গায় পণ্য বিক্রি করার অনুমতি এক্ষেত্রে দেওয়া হয়েছে। কৃষিক্ষেত্র সংস্কারের সূচনা করেছে কেন্দ্র। কিন্তু কৃষকরা তা মানতে নারাজ। কৃষক এবং বিরোধী দলগুলি দাবি করে যে আইনগুলি সরকার গ্যারান্টিযুক্ত দামে শস্য কেনার ব্যবস্থা বন্ধ করে দিতে পারে, যার ফলে তারা বড় কর্পোরেশনগুলোর করুণার পাত্র হয়ে উঠবে।
এদিন পতাকা নিয়ে কৃষকদের কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শোনা যায়। পঞ্জাবের লোক ইনসাফ পার্টির বিধায়ক সিমনজিৎ সিং বাইনস স্পষ্টতই দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং আশা করছেন যে এনিয়ে আলোচনা হবে। তিনি কেন্দ্রের কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের তিন মাসের বিক্ষোভের অন্যতম প্রধান নেতা। সেপ্টেম্বরে, তিনি দিল্লিতে একটি মোটরবাইক সমাবেশের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন, যা সংসদ ভবনে পিকেটিংয়ের মাধ্যমে শেষ হবে। পুলিশ, বিক্ষোভকারীদের উপর অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের জন্য এদিন সমালোচিত হয়। যদিও তাদের মতে তারা তাদের সিনিয়র অফিসারদের নির্দেশে কাজটি করেছে।