ভাদোধরা: দেশজুড়ে মারণ ভাইরাসের দাপটে যখন ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তখন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে ধর্মীয় স্থানগুলো৷ এ দেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি করলেও কোভিড যুদ্ধে কাঁধে কাঁধ লাগিয়ে লড়াই করছেন বিভিন্ন ধর্মের মানুষ। তাঁদের লক্ষ্য করোনা যুদ্ধে আক্রান্তদের জয়ী হতে সাহায্য করা৷ কোথাও মন্দির, কোথাও গুরুদ্বার তো কোথাও মসজিদ, এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে এগিয়ে এসেছেন৷
মোদীরাজ্য গুজরাতে প্রতিদিন সাত হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। আক্রান্তের সংখ্যা এত বেশি যে হাসপাতালেও করোনা রোগীদের জন্য বেড কম পড়ছে৷ এই পরিস্থিতিতে ভাদোধরার জাহাঙ্গিরপুরার একটি মসজিদে কোভিড সেন্টার তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয় জাহাঙ্গিরপুরার মসজিদের ট্রাস্টি। উনি বলেন, ‘রমজানের মাসে এর থেকে ভালো কিছু হয় না। মানুষের প্রাণ বাঁচানোর থেকে বড় কোনও ইবাদত হতে পারে না।’ সঞ্চালক ইরফান শেখ বলেন, ‘দেশজুড়ে চরম সঙ্কটের সময়, এই সময়ে সরকারের সমালোচনা না করে, সবার এগিয়ে আসা দরকার। এখনও মসজিদে মানুষ নমাজ আসছেন ঠিকই, কিন্তু চারিদিকে হাসপাতালে বেডের অভাব থাকার কারণে আমরা মসজিদকে কোভিড সেন্টারে বদলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। আপাতত এখানে ৫০টি বেড আর অক্সিজেনের বন্দোবস্ত করা হয়েছে।’ গত বছর কোভিডের প্রথম ঢেউ যখন আছড়ে পড়ে, তখনও দেশের বেশ কিছু মসজিদ কর্তৃপক্ষ এই উদ্যোগ নিয়েছিল।
শুধু মসজিদই নয়। গুজরাটের ভাদোধরায় স্বামীনারায়ণ মন্দিরেও কোভিড রোগীদের জন্য হাসপাতালের ব্যবস্থা করেছে মন্দির কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার ১৩ এপ্রিল থেকে কোভিড ১৯ রোগীদের জন্য ৫০০টি বেড এবং অক্সিজেনের সুব্যবস্থা-সহ মন্দিরে অস্থায়ী কোভিড হাসপাতাল চালু করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে গুরুদ্বারও। নয়ডার সেক্টর-১৮-য় অবস্থিত একটি গুরুদ্বার কোভিড আক্রান্ত রোগী এবং তাঁদের পরিবারকে খাদ্য সরবরাহ করে চলেছে। গুরুদ্বারের প্রধান পুরোহিত গুরপিত সিং জানিয়েছেন, ‘আমরা সেই পরিবারগুলিকে সাহায্য করার চেষ্টা করছি, যাঁরা কোভিড পজিটিভ এবং রান্না করতে পারছেন না৷ আমরা তাঁদের জন্য খাবারের প্যাকেট তৈরি করছি এবং এটি আবাসনের গেটের সামনে রেখে দিয়ে আসছি৷ এরপর সেখানকার নিরাপত্তারক্ষীরা পরিবারের কাছে খাবারের প্যাকেট পৌঁছে দিচ্ছেন।’