দেরাদুন: উত্তরাখণ্ডের চামলি জেলায় ঘটে যাওয়া ভয়ঙ্কর হিমবাহ স্খলনের ঘটনায় ইতিমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন অনেকেই। আর তারপরেই এই ঘটনার পিছনে ‘প্রকৃতির প্রতিশোধ’এর মত তথ্য সামনে এনেছেন পরিবেশবিদরা। কিন্তু এবার ঘটনাস্থলের নিকটবর্তী রেনি গ্রামের বাসিন্দারা এই ঘটনার পিছনে এক নতুন জল্পনা সামনে নিয়ে আসতেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ১৯৬৫ সালে নন্দাদেবী পর্বতে ভারত-আমেরিকা যৌথ তেজস্ক্রিয় অভিযানের সময়ে ফেলে যাওয়া একটি যন্ত্রাংশের বিস্ফোরণে ঘটেছে এই হিমবাহ স্খলনের ঘটনা। এক গ্রামবাসী এই সম্ভাবনার সপক্ষে বলেছেন, “গত রবিবার এই বন্যা ঘটার ঠিক পরেই আমরা বাতাসে একটা বিকট গন্ধ অনুভব করেছি, যার ফলে অনেকের শ্বাসকষ্টের মতো অস্বস্তিও অনুভূত হয়েছে”। এই প্রসঙ্গে অন্য আরেক গ্রামবাসী বলেছেন, “এই গন্ধ অনেকটা পুড়ে যাওয়া বর্জ্য-এর মতো মনে হয়েছিল। এই ঘটনার পিছনে কোনো তেজস্ক্রিয় যন্ত্রের বিস্ফোরণ লুকিয়ে থাকতে পারে”। এই প্রসঙ্গে গ্রামবাসীরা কেন্দ্র সরকারের হস্তক্ষেপ ও তদন্তের দাবি তুলেছেন মঙ্গলবার থেকেই।
উল্লেখ্য, ১৯৬৫ সালে চীনের উপর নজরদারির খাতিরে নন্দাদেবী পর্বতে ভারতের তদন্তকারী সংস্থা আইবি’র সঙ্গে একযোগে একটি অভিযান চালিয়েছিল আমেরিকার তদন্তকারী সংস্থা সিআইএ। এই অভিযানে একটি তেজস্ক্রিয় যন্ত্রও নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানা গেছে সূত্র মারফৎ। যদিও, তুষার ঝড়ের কারণে এই অভিযান মাঝপথেই বন্ধ করে দেওয়া হয়, যার ফলস্বরূপ ওই তেজস্ক্রিয় যন্ত্র ওখানেই ফেলে আসতে বাধ্য হন অভিযানের সদস্যরা। পরে ওই যন্ত্রের সন্ধান চালানো হলেও তা আর মেলেনি।
এবার উত্তরাখণ্ডের এই বিপর্যয়ের পিছনে এই যন্ত্রের বিস্ফোরণের তথ্যকে সামনে আনা হচ্ছে, কারণ ওই যন্ত্র ১০০ বছর অব্দি বরফের নিচে সক্রিয় থাকতে পারে বলে জানা গেছে। কিন্তু এই যুক্তিকে অনেকটা খণ্ডন করে ভারতীয় নৌসেনার প্রাক্তন ক্যাপ্টেন এমএস কোহলি জানিয়েছেন, “এটা সম্ভব নয় যে ওই যন্ত্র নিজে থেকে আবার সক্রিয় হয়ে এতদিন পর কোনো বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তুলতে পারে, কারণ এই দীর্ঘদিন বরফে চাপা পড়ে থাকার কারণে ওই যন্ত্রের তেজস্ক্রিয় জ্বালানি নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি”। অনেক বিজ্ঞানীও এই তত্বকে উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন যে এই তত্ত্ব সম্পুর্ন ভিত্তিহীন।