সুলতানপুর: সোনার বাংলা গড়ার কারিগরদের অন্যতম উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ যখন একের পর এক সভা করে চলেছেন বঙ্গে, তখন তাঁর নিজের গড়ে ‘আচ্ছে দিন‘-এর নমুনা ঝড়ে পড়ছে। দাড়ি কামানোর ব্লেড দিয়ে সন্তান প্রসবের চেষ্টার ফল যা হওয়ার, তাই ঘটল। প্রসূতি ও তাঁর সদ্যোজাতের মৃত্যু। বলাই বাহুল্য ঘটনাটি যোগীরাজ্য সুলতানপুরের৷ ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হাতুড়ে ডাক্তার এবং অবৈধ হাসপাতালের মালিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ৷
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেআইনি হাসপাতালটির নাম মা সারদা৷ সেখানে যাঁরা কাজ করেন, তাঁরা প্রত্যেকেই হাতুড়ে ডাক্তার। যাঁরা নার্সের কাজ করেন, তাঁদেরও কারও নাকি কোনও প্রশিক্ষণ নেই৷ অবৈধ হাসপাতালের মালিক অভিযুক্ত রাজেশ সাহানি। সেখানকার অন্যতম হাতুড়ে ডাক্তার রাজেন্দ্র শুক্লা, অষ্টম শ্রেণির গণ্ডিও পেরোতে পারেননি তিনি। সেদিন সন্তান প্রসবের দায়িত্ব ছিল তাঁর৷ ওই প্রসূতি ওই দিন সেখানে এলে, সি সেকশন পদ্ধতিতে প্রসব করাতে গিয়ে দাড়ি কামানোর ব্লেড ব্যবহার করেন অভিযুক্ত রাজেন্দ্র শুক্লা। সিজারের জন্য পেট কাটার পরই অপারেশন টেবিলে রীতিমতো রক্তাক্ত অবস্থা তৈরি হয়। রক্তক্ষরণ বাড়তে থাকায় পরিস্থিতি যে হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে, তা বুঝতে দেরি হয়নি অভিযুক্তর৷ উপায় না দেখে তখনই মহিলার স্বামীকে তিনি বলেন, তাঁর স্ত্রীকে এখনই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। প্রসূতিকে তড়িঘড়ি লখনউয়ের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
স্ত্রীর মৃত্যুর খবর পেয়েই স্বামী রাজারাম পুলিশের দ্বারস্থ হন। এরপরই পুলিশ হাসপাতালে হানা দিয়ে অভিযুক্ত রাজেন্দ্র ও মালিক রাজেশকের গ্রেফতার করে। এই ধরনের বেআইনিভাবে গজিয়ে ওঠা হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই মুখ্য মেডিক্যাল অফিসারকে চিঠি লিখেছে পুলিশ। এই ধরনের অবৈধ হাসপাতাল কী করে ব্যবসা ফেঁদে বসল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এমনকী এর আগেও এই ধরনের কোনও ঘটনা এই হাসপাতালে ঘটেছে কিনা, তাও তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।