নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার ফাঁদে বড়সড় চক্র। পুলিশ প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়েই কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে বিক্রি হত রাজ্যসভার আসন। ২০১৩ সালের জুলাই মাস থেকে এইভাবে মোটা টাকায় বিক্রি হয়েছে একাধিক সাংসদ পদ। সম্প্রতি সিবিআইয়ের হাত ধরে সামনে এল এই সমস্ত চাঞ্চল্যকর তথ্য। এর সঙ্গেই খবর, সিবিআইয়ের পাতা ফাঁদে ধরা পড়েছে এই চক্রের সঙ্গে জড়িত চার মাথা। সোমবার এই ঘটনা প্রসঙ্গে একটি বিবৃতি দিয়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তরফ থেকে এমনটাই জানানো হয়েছে। জানা যাচ্ছে, বিগত কয়েক মাস ধরে সর্বোচ্চ একশো কোটি টাকার বিনিময়ে রাজ্যসভার একাধিক আসন বিক্রি করেছে এই চক্র। তারই মূল পান্ডা অর্থাৎ যার সাথে টাকা লেনদেন করা হত তাকে সম্প্রতি হাতেনাতে ধরে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার পদস্থ আধিকারিকরা। জানা যাচ্ছে সম্প্রতি গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এই চক্রের জন্য একটি ফাঁদ পাতে সিবিআই। গোয়েন্দাদের কাছে আগেই খবর ছিল ওই চক্রের পান্ডার সঙ্গে এক ব্যক্তির টাকার লেনদেন হতে চলেছে। সেই খবরের ভিত্তিতেই অভিযান এবং সর্বোপরি ওই চক্রের সঙ্গে জড়িত চার ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে সিবিআই।
জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি এই চক্রের পান্ডাদের গ্রেফতার করতে বিগত কয়েক দিন ধরে একাধিক ব্যক্তির ফোনে আড়ি পেতে ছিলেন সিবিআই আধিকারিকরা। তখনই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। জানা যাচ্ছে এই ঘটনা সঙ্গে জড়িত গ্রেফতার হওয়া চারজনের মধ্যে একজন মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা, একজন কর্ণাটকের বাসিন্দা এবং দুজন দিল্লির বাসিন্দা। ধৃত এই তিন ব্যক্তির সঙ্গে আরও অনেকেই এই চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ গোয়েন্দা আধিকারিকদের। এর সঙ্গেই খবর যে তারা বিগত কয়েক মাসে রাজ্যসভার সাংসদ পদের পাশাপাশি গভর্নর, একাধিক সরকারি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারপার্সনের পদ, এমনকি বহু মন্ত্রীর দপ্তরের চাকরিও মোটা টাকার বিনিময়ে বিক্রি করেছে।
সিবিআই সূত্রে খবর, ধৃত দিল্লির বাসিন্দা অভিষেক বোড়া এবং কর্নাটকের বাসিন্দা প্রেমকুমারের সঙ্গে বহু আমলা মন্ত্রীদের যোগাযোগ রয়েছে। তারাই তাদের এই সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের যোগ ব্যবহার করে এই চক্র চালাতে সাহায্য করত। এই দুই ব্যক্তিরই রাজ্যসভার সাংসদ থেকে শুরু করে একাধিক উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিক এবং মন্ত্রীদের সঙ্গে নিয়মিত কথা হত। এর সঙ্গেই আরও আরো জানা যাচ্ছে যে, এই দুই ব্যক্তি উচ্চপদস্থ সরকারী আধিকারিকদের সঙ্গে বাকিদের সাক্ষাৎ করিয়ে দিতেন এবং পরবর্তীতে মোটা টাকার বিনিময় সিট বিক্রি করতেন। এছাড়া প্রেম কুমার বেশ কয়েকবার উচ্চপদস্থ সিবিআই কর্তা সেজেও বেশ কয়েকজন সরকারি অফিসারকে ফোন করে হুমকি দিয়েছে বলে খবর। এই সমস্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করেই পুরো বিষয়টি সামনে আসে এবং পরে তাদের গ্রেফতার করে সিবিআই কর্তারা।